কয়েকদিন আগে পর্যন্ত উত্তরপূর্ব ভারত, বিহার, ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ দখলের ডাক দিচ্ছিল বহু বাংলাদেশি। ইউনুস জমানায় সোশ্যাল মিডিয়ায় এই সব দাবি এবং সেই সংক্রান্ত পোস্টে ভরিয়ে দিয়েছিলেন একশ্রেণির বাংলাদেশি। আবার সম্প্রতি বহু রাজনীতিবিদের গলাতেও 'ভারত দখলের' আওয়াজ শোনা গিয়েছে। বিএনপি আবার আগরতলা পর্যন্ত লংমার্চের আয়োজন করেছিল। এই সবের মাঝেই এবার বাংলাদেশিদের একটা অংশ আশঙ্কা করছে, ফেনি অঞ্চলটি দখল হয়ে যেতে পারে। আর এই আবহে সেখানে একটি সেনা ক্যান্টনমেন্ট গড়ে তোলার দাবিতে পথে নেমেছে 'ভারতীয় আগ্রাসন প্রতিরোধ সর্বদলীয় কমিটি' নামক সংগঠন। (আরও পড়ুন: বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাংলাদেশিদের খোঁজ পুলিশের! একদিনেই চিহ্নিত ২০ অনুপ্রবেশকারী)
বাংলাদেশিদের অভিযোগ, ভারতের গণমাধ্যমে নাকি ফেনি দখলের হুমকি দেওয়া হয়েছিল। আর তাতেই এবার রাস্তায় নেমে ভারতের বিরুদ্ধে স্লোগান তুলেছেন ফেনির বহু রাজনীতিবিদ। রিপোর্ট অনুযায়ী, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদ্যসরা উপস্থিত ছিলেন বৃহস্পতিবারের এই পদযাত্রায়। ফেরিন কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গন থেকে এই পদযাত্রা শুরু হয়। দেড় কিলোমিটার গিয়ে তা শেষ হয় জেলাশাসকের কার্যালয়ের সামনে। এরপর জেলাশাসকের প্রধান উপদেষ্টার কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, ভারতের এক টিভি চ্যানেলে নাকি সম্প্রচার করা হয়েছে, ৫ মিনিটে তারা ফেনি দখল করে নিতে পারে। এই আবহে আতঙ্কিত বাংলাদেশিরা চাইছেন, ফেনিতে একটি ক্যান্টনমেন্ট গড়ে তোলা হোক। তাতে করে ফেনি এবং আশেপাশের এলাকার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত হবে এবং দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা হবে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি 'চার দিনে কলকাতা দখলের' হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন বাংলাদেশের এক প্রাক্তন সেনা কর্তা। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল সেই ভিডিয়ো। এরপরে বিএনপি নেতা রুহুল রিজভিও ভারতের একাংশ দখলের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। আবার বাংলাদেশের তিসরাই ইনসাফ পার্টির নেতা মিনাজ প্রধানও বলেন, 'আমরা চার দিনের মধ্যেই কলকাতা, আগরলতলা ও সেভেন সিস্টার্স দখল করে নিতে পারি।' যার পালটা জবাব দিয়ে বিধানসভায় সরব হয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভি ভারতের একাংশ দখলের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। আবার বাংলাদেশের তিসরাই ইনসাফ পার্টির নেতা মিনাজ প্রধানও বলেন, 'আমরা চার দিনের মধ্যেই কলকাতা, আগরলতলা ও সেভেন সিস্টার্স দখল করে নিতে পারি।' যার পালটা তোপ দেগে বিধানসভায় মমতা বলেছিলেন, 'কেউ কেউ বলছেন, বিহার দখল করবেন, ওড়িশা দখল করবেন...আমি বলি ভাই, ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, সুন্দর থাকবেন। কিন্তু এতটাও হিম্মত আপনার কেন, কারও নেই। যে বাংলা, বিহার, ওড়িশা সব নিয়ে নেবেন, আর আমরা বসে বসে ললিপপ খাব। এটা ভাববার কোনও কারণ নেই। আমরা যথেষ্ট সচেতন নাগরিক।' এই মন্তব্যের পরদিনই বাংলাদেশের বিএনপি নেতা রুহুল রিজভি আবার বলেন, 'আমরা কি আমলকি চুষব?' এই সব মন্তব্য, পালটা মন্তব্যের আবহেই এখন উত্তপ্ত পরিস্থিতি দুই বাংলার মধ্যে।