বাংলাদেশ জুড়ে ভারত বিরোধীতার সুর চড়া থাকার মাঝেই বিদ্যুৎ চুক্তি ঘিরে ঢাকা নিজের অবস্থান কার্যত জানিয়ে দিল। বুধবার ঢাকায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের জলসম্পদ, পরিবেশ, বন, জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত মন্ত্রকের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ভারতের সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তি বাতিল করা সহজ নয় বাংলাদেশের পক্ষে।
বুধবার ঢাকায় ‘বাংলাদেশ জ্বালানি, সমৃদ্ধি, ২০৫০’ শীর্ষক এক সম্মেলনে যোগ দেন ইউনুস সরকারের উপদেষ্টা রিজওয়ানা। সেখানে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, ভারতের সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তি বাতিলের সম্ভাবনা নিয়ে। উত্তরে রিজওয়ানা বলেন,' বলা যত সহজ, বাতিল করে দেন… শুধু একটা উদাহরণ দিই, আমরা নাইকো চুক্তির দিকে তাকাই.. সেই নাইকো চুক্তির থেকে বের হয়ে আসতে, এই দেশকে একদম আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম পর্যন্ত যেতে হয়েছে। এবং এগুলো বের হয়ে আসার প্রক্রিয়াও কিন্তু অনেক বেশি ব্যয়বহুল।' রিজওয়ানা এই সাফ বার্তার সঙ্গেই ঢাকার মাটিতে দাঁড়িয়ে জানিয়ে দেন,'যে চুক্তি হয়েছে, তা আপনারা জানেন যে একটা রিভিউ প্রসেসের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। চুক্তিগুলি আসলে বেশ অসম চুক্তি। বাংলাদেশের জন্য এগুলোর সেফ গার্ড আমরা তেমন রাখিনি। আর প্রকল্পগুলো যেহেতু বাস্তবায়িত হয়ে গিয়েছে, এখন ওই প্রকল্পগুলোর ঋণের বোঝাও আমাদের টানতে হচ্ছে, ওই প্রকল্পগুলোকে বসিয়ে বসিয়ে টাকা দিতে হচ্ছে। একইসঙ্গে আমাদের ওপর চাপ আছে ট্রানজিশনের দিকে যাওয়ার।এই সবগুলো সমন্বয় করে একটা প্ল্যান উপস্থাপনা করা অসম্ভব নয়, তবে সহজ নয়।' তিনি বলেন, ‘আমাদের বিভিন্ন ফসিল ফুয়েল, রিলায়েন্ট প্রজেক্টগুলোতে যে ধরনের অসম চুক্তি হয়েছে, যে অস্বাভাবিক ব্যয় আমাদের বহন করতে হচ্ছে, জনগণের কাছ থেকে টাকা নিয়ে এই ড্যামেজ কন্ট্রোল করতেই আমাদের অনেকটা সময় লেগে যাচ্ছে। ’
কিছু দিন আগেই খবরে উঠে এসেছিল যে শেখ হাসিনার আমলে হওয়া গৌতম আদানির সঙ্গে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ চুক্তি খতিয়ে দেখবে ইউনুস সরকার। শুধু আদানিরাই নয়, এই গোষ্ঠী ছাড়াও আরও ৬ টি সংস্থার সঙ্গে হওয়া বাণিজ্যিক চুক্তি বাংলাদেশ খতিয়ে দেখছে বলেও খবর ছিল। এদিকে, রয়টার্সের রিপোর্টে বলা হয়, বাংলাদেশ ওই চুক্তি নিয়ে পুনরায় ভাবছে, এমন ইঙ্গিত আদানি গোষ্ঠী পায়নি। তারই মাঝে এল ইউনুস ইউনুস সরকারের উপদেষ্টার তরফে এই বক্তব্য।