হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কারণে গভীর রাতে তাঁকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন রোগে ভুগছেন খালেদা জিয়া। সেই অবস্থায় শুক্রবার রাতে হঠাৎ তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। খালেদা জিয়ার সঙ্গে রয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন। তিনি জানান, চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই বিএনপি চেয়ারপার্সনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মারাত্মক শারীরিক অবস্থার অবনতি খালেদা জিয়ার, আবার সিসিইউ–তে ভর্তি
জানা যাচ্ছে, শারীরিক অসুস্থতার কারণে ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ অ্যাম্বুলেন্স ডেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় খালেদা জিয়াকে। বর্তমানে হাসপাতালের ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটে তিনি ভর্তি রয়েছেন। এর আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য শেষবার তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে গিয়েছিলেন গত ১ মে। সেই সময়ও চিকিৎসকরা তাঁকে দুদিন সিসিইউতে রেখে চিকিৎসা করেছিলেন। তার আগে গতবছরের ৯ অগস্ট ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন খালেদা জিয়া। সেই সময় প্রায় ৫ মাস ধরে তাঁর চিকিৎসা চলেছিল।
প্রসঙ্গত, ৭৯ বছর বয়সী প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরেই লিভার সিরোসিস, আর্থাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস হার্ট এবং চোখের সমস্যা সহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। ২০১৮ সালে দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন খালেদা। ২০২০ সালে জেল থেকে শর্ত সাপেক্ষে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। এরপর হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের অধীনে বারবার চিকিৎসা পরিষেবা নিচ্ছেন খালেদা জিয়া।
পরে ২০২১ সালের নভেম্বরে খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস ধরা পড়ে। তখন বাংলাদেশের চিকিৎসকরা তাঁকে বিদেশে পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন। কারণ দেশটিতে এই রোগের চিকিৎসার জন্য উপযুক্ত পরিকাঠামো ছিল না। তিনি বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করাতে চাইছিলেন। কিন্তু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বার বার খালেদা জিয়াকে বিদেশে যেতে বাধা দেয় বলে অভিযোগ তোলে বিএনপি। অবশেষে গত ২৬ অক্টোবর তিন জন মার্কিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বাংলাদেশে এসে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা করেন। তাঁর পেট ও বুকে জল জমে যাওয়া এবং লিভারের রক্তপাত বন্ধ করার জন্য ট্রান্সজুগুলার ইন্ট্রাহেপ্যাটিক পোর্টোসিস্টেমিক শান্ট পদ্ধতিতে হেপাটিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছিলেন চিকিৎসকরা।