বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে ইতিমধ্যেই সোমবার ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রির কাছে ইউনুস সরকার ক্ষোভের সুর চড়া করেছিল। এর আগেও এক সাক্ষাৎকারে মহম্মদ ইউনুস ইঙ্গিত দিয়েছেন হাসিনার প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে তাঁর সরকার কী ভাবছে তা নিয়ে। এবার বাংলাদেশে শেখ হাসিনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখতে তৎপর ইউনুস প্রশাসনের আওতায় থাকা ‘বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টালিজেন্স ইউনিট’। এই সংস্থা, বাংলাদেশে অর্থ বিষয়ক গোয়েন্দা সংস্থা।
সোমবার বাংলাদেশের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বা বিএফআইইউ দেশের ব্যাঙ্ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির কাছে এক নির্দেশ পাঠায়। সেই নির্দেশে তথ্য তলব করা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানার ব্যাঙ্কের হিসাবের তথ্য তলব করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টেরও ব্যাঙ্কের হিসাবের খতিয়ান চাওয়া হয়েছে। তথ্য চাওয়া হয়েছে, চৌধুরী জাফারুল্লা শরাফত, তাঁর ভাই হবিবুল্লা শরাফত, ডালিয়া চৌধুরীর হিসাবেরও তথ্য চাওয়া হয়েছে। এর আগে, জাফারুল্লাও হবিবুল্লাহর ভাই চৌধুরী নাফিজ সরাফতেরও ব্যাঙ্কের হিসাব জব্দ হয়েছে। প্রসঙ্গত, নাফিজ সারাফত পদ্মা ব্যাঙ্কের প্রাক্তন চেয়ারম্যান। এদিকে, লেনদেন তলব করা নিয়ে যে নির্দেশ বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টালিজেন্স ইউনিট নির্দেশ দিয়েছে, তাতে আর্থিক তছরুপ সংক্রান্ত নিয়ম বিধিও প্রযোজ্য রয়েছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ছাত্র-গণ আন্দোলনের জেরে গত ৫ অগস্ট বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে চলে আসেন শেখ হাসিনা। তাঁর সঙ্গে তাঁর বোন শেখ রেহানাও বাংলাদেশ ছেড়ে চলে আসেন ভারতে। এরপর তাঁরা ভারতে আশ্রয় নেন। তবে শেখ হাসিনাকে নিয়ে একের পর এক মামলায় কোমর কষছে বাংলাদেশের বর্তমান সরকার। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রয়েছে গণহত্যার অভিযোগ। হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতেও যাওয়ার বিবেচনায় বাংলাদেশ। এদিকে, শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য জানতে কোমর বেঁধে নেমেছে বাংলাদেশের বিএফআইইউ। শেখ মুজিবর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টেরও হিসাব চাওয়া হয়েছে। এই ট্রাস্টে কারা টাকা দিত, বা ট্রাস্টের টাকা কীভাবে ব্যবহার হত, তা খতিয়ে দেখতে চায় বিএফআইইউ। এছাড়াও শেখ হাসিনা ও রেহানা কোনও প্রকারের আর্থিক দুর্নীতিতে রয়েছেন কি না, তা জানতে চেয়েও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হিসাব দেখতে চাইছে বাংলাদেশের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা। নির্দেশিকায় যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁদের নথি, কেওয়াইসি, লেনদেনের বিবরণ ৫ দিনের মধ্যে জমা দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে।