গতকালই বাংলাদেশ নিয়ে সংসদে মুখ খুলেছিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। আর এবার ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে মুখ খুললেন পড়শি দেশের বিদেশ মন্ত্রকের উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। আজ তিনি বলেন, 'আমরা সব দেশের সাথেই সম্মান ও সমতার ভিত্তিতে সুসম্পর্ক চাই। সেই লক্ষ্যেই এই সরকার কাজ করে যাচ্ছে। ভারতকে আমরা স্পষ্ট বার্তা দিয়েছি, আমরা ভালো সম্পর্ক চাই। তবে সেটা দুপক্ষেরই স্বার্থের ভিত্তিতে হতে হবে।' (আরও পড়ুন: ইমপিচ করা হল দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টকে, এবার কী হবে সেই দেশে?)
আরও পড়ুন: ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দেওয়া বাংলাদেশে গেল ১৮০ টন ভারতীয় পেঁয়াজ!
আরও পড়ুন: 'ভারতের উপর কুনজর দিলে হাত-পা,কোমর ভেঙে দেব', বাংলাদেশকে হুমকি ফুরফুরার পীরজাদার
এর আগে গতকাল বাংলাদেশ নিয়ে লোকসভায় এস জয়শংকর বলেছিলেন, 'বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সঙ্গে যা হচ্ছে, তা আমাদের কাছে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের ওপর হামলার একাধিক ঘটনা ঘটেছে। আমরা আমাদের উদ্বেগ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। সম্প্রতি ভারতের বিদেশ সচিব ঢাকা সফর করেন। তাঁর বৈঠকে এই বিষয়টি উঠে এসেছে। আমরা আশা করছি যে বাংলাদেশ তাদের নিজস্ব স্বার্থেই ব্যবস্থা নেবে যাতে সেখানকার সংখ্যালঘুরা নিরাপদে থাকে।' (আরও পড়ুন: ভারতে চিকিৎসা করাতে এসে মৃত্যু ২৭ বছর বয়সি বাংলাদেশি তরুণের, দেহ গেল ময়নাতদন্তে)
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে 'জঙ্গিদের উর্বর লীলাভূমি' আখ্যা, দিল্লিতে বসে জামাতকে তোপ শেখ হাসিনার
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ দখলের ছক কষা হচ্ছে? বিস্ফোরক ওপার বাংলা, ইসকন নিয়ে গুরুতর অভিযোগ
এর আগে সম্প্রতি বাংলাদেশে গিয়েছিলেন ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি। দেশে ফিরে এসে সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটিকে তিনি জানান, ভারতে বসে শেখ হাসিনা যে রাজনৈতিক মন্তব্য করে চলেছেন, তা পছন্দ করছে না দিল্লি। বিক্রমের কথায়, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কোনও একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। দুই দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্কের ওপর বেশি জোর রয়েছে ভারতের। বিক্রম মিশ্রি জানিয়েছিলেন, শেখ হাসিনা নিজের ব্যক্তিগত কমিউনিকেশনস ডিভাইস ব্যবহার করে রাজনৈতিক মন্তব্য করেছেন। ভারত সরকার কোনও ভাবে সেই সব মন্তব্যের সঙ্গে যুক্ত নয় বা সেই সব মন্তব্য করার জন্যে কোনও প্ল্যাটফর্মও ভারত সরকার তাঁকে দেয়নি। এদিকে বিক্রম জানান, ঢাকা সফরের সময় বাংলাদেশি সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন তিনি। দিল্লি যে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন, তা স্পষ্ট করে ঢাকাকে জানিয়েছেন বিক্রম। এই আবহে বাংলাদেশ সরকার যে হিন্দুদের ওপর হামলার সব ঘটনা স্বীকার করছে না, তা নিয়ে ভারত সরকার এখনও চিন্তিত। তবে সম্প্রতি বাংলাদেশ সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে। সেটির প্রশংসা করেন বিক্রম। (আরও পড়ুন: লাদাখের ডেপস্যাঙে কি সব প্যাট্রোলিং পয়েন্টেই টহল দিতে পারবে ভারতীয় সেনা?)
আরও পড়ুন: কানাডায় খুন ৩ ভারতীয় পড়ুয়া, সতর্কতা জারি দিল্লির, খলিস্তান ইস্যুতে 'নয়া বিতর্ক'
আরও পড়ুন: 'বাংলাদেশের এক ইঞ্চি মাটিতেও...', ভারতকে কি ভয় পাচ্ছে জামাতে ইসলামি?
উল্লেখ্য, বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের অভিযোগ উঠে আসছে। হাসিনার বিদায়ের পর থেকেই মন্দির থেকে শুরু করে হিন্দুদের বাড়িঘরে ভাঙচুর চলেছে। সেই সময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা থেকে বিএনপি-জামাত দেখেছিল 'আওয়ামি লিগের ষড়যন্ত্র'। তবে কয়েক মাস যাওয়র পর সেই দেশে হিন্দুদের অবস্থা যেন আরও খারাপ। ধর্মের নামে চাকরি থেকে জোর করে পদত্যাগ করানো হচ্ছে সংখ্যালঘুদের। অনেককে ধর্মান্তরিত করানোর অভিযোগও উঠেছে। এরই মাঝে চট্টগ্রামে হিন্দু এবং বৌদ্ধদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। সংখ্যালঘু অত্যাচারে সেখানে অভিযুক্ত খোদ সেনা। হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুর গ্রেফতারি ঘিরে আরও উত্তাল হয় পরিস্থিতি। এদিকে সেখানে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে বাংলাদেশের কট্টরপন্থীরা পথে নেমেছে। 'জুলাই বিল্পবের' ছাত্র নেতারাও ইসকনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। সারজিস আলম চট্টগ্রামে ইসকন এবং হিন্দুদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক ভাষণ দিয়েছেন সম্প্রতি। এই আবহে ভারতের রাস্তাতেও লোক নেমেছে। বাংলাদেশি মৌলবাদে বিরুদ্ধে স্লোগান উঠেছে এখানে। ভারত সরকারও একাধিক বিবৃতি প্রকাশ করে ওপারের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।