মাঝরাতে হাসপাতালে ভর্তি করতে হল বিএনপি চেয়ারপার্সন তথা বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে। দ্রুত চিকিৎসা করার জন্য বিদেশে যাওয়ার কথা রয়েছে তাঁর। সেই ছাড়পত্র দিয়েছে মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। তাঁকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতিও চলছিল। কিন্তু তার মধ্যেই বৃহস্পতিবার মাঝরাতে আবার বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় খালেদা জিয়াকে। এভারকেয়ার হাসপাতালে তাঁকে মাঝরাতে ভর্তি করতে হয়েছে বলে বিএনপি’র মিডিয়া সেলের সদস্য সায়রুল কবির খান জানিয়েছেন ঢাকা ট্রিবিউন সংবাদপত্রকে।
এদিকে গত সাড়ে ৪ বছরে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ৪৭৯ দিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সেখানে আবার অসুস্থ হয়ে পড়লেন। খালেদা জিয়ার চিকিৎসক প্রফেসর এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেছেন, মেডিক্যাল বোর্ড একাধিক পরীক্ষা–নিরীক্ষা করতে বলেছে। হাসপাতালের আলাদা কেবিনে রাখতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘তাঁর চিকিৎসার পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে পরীক্ষার রিপোর্ট আসার পর। সেটা দেখে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা করা হবে।’ এই হাসপাতালেই ৪৫ দিন চিকিৎসা করিয়ে গত ২১ অগস্ট বাড়ি ফিরেছিলেন খালেদা জিয়া। গত পাঁচ বছর খালেদা জিয়া গৃহবন্দি ছিলেন। ৬ অগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হওয়ার পর বন্দিমুক্ত হন তিনি।
আরও পড়ুন: বাতাসের মানের নিরিখে আসানসোল অনেকটা এগিয়ে গেল, পিছিয়ে পড়ল কলকাতা-হাওড়া
অন্যদিকে আজ, বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার হাসপাতালে ভর্তির খবর জানানো হয়। রাত ১টা নাগাদ বিএনপি নেত্রীকে রাজধানী ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আওয়ামি লিগ সরকার পড়ে যাওয়ার পর খালেদা জিয়ার উপর থেকে সমস্ত মামলা তুলে নেওয়া হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর সিরোসিস লিভার, আর্থারাইটিস, ডায়েবিটিস–সহ নানা অসুখ রয়েছে। তাঁর কিডনি, ফুসফুস, হার্ট এবং চোখের সমস্যাও রয়েছে। তাঁর হার্টে পেসমেকার বসানো রয়েছে।
এছাড়া খালেদা জিয়ার রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয় ২০২৩ সালের ২৭ অক্টোবর। আমেরিকা থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে সেই অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। তার পর ৫ মাস হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। ১৯৯১ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল এবং ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদে ছিলেন খালেদা জিয়া। গত অগস্ট মাসে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তাঁকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ শাহাবুদ্দিন। কদিন আগেই দীর্ঘ ১৭ বছর পর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সচল করা হয় খালেদা জিয়ার।