নির্বাচনে লড়াইর করার ওপরে নিষেধাজ্ঞা ছিলই। এবার জামাতকে ওপর পুরোপুরি নিষিদ্ধ করল বাংলাদেশের শেখ হাসিনা সরকার। আওয়ামি লিগ এবং তাদের সহযোগী ১৩টি রাজনৈতিক দল একযোগে জামাত এবং তাদের ছাত্র সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে মত দেয়। কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেপথ্যে সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশে যে হিংসা ছড়িয়েছিল, তার পিছনে জামাতের হাত ছিল বলে অভিযোগ সরকারের। এই আবহে জামাত-ই-ইসলামি এবং ইসলামি ছাত্র শিবিরকে পুরোপুরি ব্যান করলেন হাসিনা। তাদের বিরুদ্ধে দেশ বিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগ করেছে সরকার। উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৮ সালে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন জামাতকে নির্বাচনী লড়াই থেকে নিষিদ্ধ করেছিল। তবে সংগঠন হিসেবে এখনও পর্যন্ত বাংলদেশে তারা বৈধ ছিল। তবে এবার হাসিনা সরকার জামাতের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন। (আরও পড়ুন: ইরানের মাটিতে হত্যা করা হল হামাস প্রধানকে, লেবাননেও হামলা চালাল ইজরায়েল)
আরও পড়ুন: ঈশ্বরের নিজের ভূমিতে প্রকৃতির তাণ্ডবলীলা, কেরলের ধসে মৃত বেড়ে ১৪৩
উল্লেখ্য, ১৯৪১ সালে বিতর্কিত ইসলাম প্রচারক আবদুল আলা মউদুদি জামাত-ই-ইসলামির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। নিজেদের কট্টরপন্থার জন্যে পাকিস্তান সরকার ১৯৫৯ এবং ১৯৬৪ সালে জামাতকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। এরপর ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় জামাত-ই-ইসলামি পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছিল। সেই সময় মুক্তিযোদ্ধা এবং সাধারণ বাঙালির গণহত্যার নেপথ্যে ছিল জামাতের হাত। বিগত বছরগুলিতে বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি-র সহযোগী ছিল জামাত। পে অবশ্য ২০১৮ সালের নির্বাচনে আগে জামাতকে ভোটের লড়াই থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। (আরও পড়ুন: কেন মহিলাদের পদবি বদলাতে লাগে স্বামীর NOC? কেন্দ্রের জবাবে 'হতবাক' TMC সাংসদ)
আরও পড়ুন: আজই শেষ ডেডলাইন, আয়কর রিটার্ন ফাইল করতে চেয়ে আদালতে আবেদন শেখ শাহজাহানের
জানা গিয়েছে, বাংলাদেশে হিংসার পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন 'গণভবনে' বৈঠকে বসেছিল আওয়ামি লিগ এবং তাদের সহযোগী ১৩টি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা। সেখানেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শরিক দলগুলিকে জানান, কোটা সংস্কার নিয়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে যে গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে, তা কার্যকর করা হবে। এরপরই ক্ষমতায় থাকা ১৪ দলের জোট জামাতকে নিষিদ্ধ সংগঠন ঘোষণা করার প্রস্তাব দেয়। সর্বসম্মত ভাবে সেই প্রস্তাব গ্রহণ করা হয় বৈঠকে।
এদিকে কোটা বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বাংলাদেশে মৃতের সংখ্যা ২০০-র গণ্ডি ছাড়িয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে সেদেশের সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে। যদিও সরকারি হিসেবে দাবি করা হয়েছে, মৃতের সংখ্যা এর থেকে অনেকটাই কম। যা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে নতুন করে। এদিকে এই কোটা বিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সংগঠনের ছয় সমন্বয়ক ঢাকা পুলিশ আটকে রেখেছে বলে অভিযোগ। এদিকে বাংলাদেশের রাস্তায় এখন আর নতুন করে রক্তপাত না হলেও পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। তবে নতুন করে আর কোনও হিংসার খবর সামনে আসেনি সেই দেশ থেকে।