বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হওয়ার পরেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁর দল আওয়ামী লিগের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে রুজু হয়েছে একের পর এক মামলা। এবার হাসিনার বিরুদ্ধে আরও গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। তাঁর কূটনীতিক পাসপোর্ট বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। উল্লেখ্য, এই পাসপোর্ট বাংলাদেশে লাল পাসপোর্ট হিসেবেও পরিচিত। শুধু হাসিনাই নয়, তাঁর দলের প্রাক্তন মন্ত্রী ও সাংসদদের লাল পাসপোর্টও বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
আরও পড়ুন: হাসিনার দলকে নিষিদ্ধ করতে মামলা, ধৃত প্রাক্তন মন্ত্রী দীপু মনি
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব (নিরাপত্তা ও অভিবাসন বিভাগ) আলি রেজা সিদ্দিকী বুধবার সেদেশের সংবাদ মাধ্যমকে জানান, হাসিনার পদত্যাগ এবং দ্বাদশ সংসদ ভেঙে দেওয়ার পর অভিবাসন ও পাসপোর্ট অধিদফতরকে মৌখিকভাবে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। সেই নির্দেশ পাওয়ার পর ইতিমধ্যেই কাজ শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি। সচিব বলেন, ‘আমরা বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে পাসপোর্ট বিভাগকে এবিষয়ে জানাবো।’
প্রসঙ্গত, গত ৫ অগস্ট পদত্যাগের পর হাসিনা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে এসেছিলেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় শেখ হাসিনা কূটনৈতিক পাসপোর্ট ব্যবহার করেছিলেন। যদিও কিছু প্রতিবেদনে বলা হয়েছে হাসিনা বৈধ ভ্রমণ নথি ছাড়াই ভারতে চলে আসেন। বর্তমানে ভারতেই আছেন হাসিনা। এই আবহে বাংলাদেশ সরকারের এই পদক্ষেপ প্রভাবিত করবে বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞমহল। যদিও এখনও হাসিনাকে প্রত্যর্পণের বিষয়ে ভারতের কাছে কোনও দাবি জানায়নি বাংলাদেশ। তবে এই দাবি জানালে দুদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক চাপে পড়তে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জোর দিয়েছে, সমস্ত বিভাগ ও আধিকারিকদের সঙ্গে পরামর্শ করার পরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
যদিও সিদ্দিকী জানান, কতজনের লাল পাসপোর্ট বা কূটনীতিক পাসপোর্ট রয়েছে সেই সংখ্যাটি তাঁর জানা নেই। তবে পাসপোর্ট বিভাগ এবং বিদেশ মন্ত্রকের কাছে সেই পরিসংখ্যান থাকবে। এছাড়াও, তিনি জানান, চুক্তিভিত্তিক সচিব পদমর্যাদার এবং কূটনীতিক পাসপোর্টের যোগ্যতা আছে তাঁদের চুক্তিও বাতিল করা হয়েছে। অনেক সচিবকেই বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। তাদের কূটনীতিক পাসপোর্ট বাতিল করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।