কোটা সংস্কারকে কেন্দ্র করে গত বছরের জুলাইয়ে ব্যাপক ছাত্র আন্দোলন গড়ে উঠেছিল বাংলাদেশে। ক্রমেই ছাত্রদের সেই আন্দোলন গণঅভ্যুত্থানের রূপ নিয়েছিল। যার ফলে পতন হয়েছিল শেখ হাসিনার সরকারের। সেই আন্দোলনের সময় নিহত হওয়ার পাশাপাশি আহত হয়েছিলেন বহু আন্দোলনকারী। এবার আন্দোলনে আহত হওয়া ১০০ জনকে পুলিশের চাকরি দিতে চলেছে বাংলাদেশ সরকার। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আহত আন্দোলনকারীদের চাকরি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: পালিয়ে বেড়াচ্ছে বাংলাদেশ ছাত্রলিগের ৫০,০০০ পড়ুয়া, অনিশ্চিত ভবিষৎ- রিপোর্ট
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, জুলাই-অগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহতদের মধ্যে প্রথমে ১০০ জনকে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে কাজ দেওয়া হবে। পরে সেই সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। এছাড়া, অন্যান্য মন্ত্রকের অধীনে বিভিন্ন দফতরে বহু আহতকে চাকরি দেওয়া হবে। মঙ্গলবার পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ(এসবি) ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কার্যালয় পরিদর্শন শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা একথা বলেন। জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আহত হওয়ার ফলে তাদের অনেক শারীরিক সমস্যা রয়েছে। সেই কথা মাথায় রেখে শারীরিক সমস্যা অনুযায়ী তাদের কাজের ব্যবস্থা করা হবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই ১০০০ পড়ুয়াকে ট্রাফিকের কাজের জন্য প্রপোজাল লেটার দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে কাজে যোগ দিয়েছেন ৪০০ জন। এই সমস্ত আহতরা তিন থেকে চার ঘণ্টা ডিউটি করছেন। এছাড়াও, এর বাইরে ট্রাফিক ডিউটিতে কাজ করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। ইতিমধ্যেই তাদের প্রপোজাল লেটারও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেরকমভাবে সাড়া পাওয়া যায়নি। সেখানে অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের মধ্যে মাত্র ৫০ জন এই কাজে আগ্রহ দেখিয়েছেন।
জানা গিয়েছে, যে পড়ুয়াদের ট্রাফিকের কাজ দেওয়া হচ্ছে তারা কাজের পাশাপাশি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবেন। সেই কারণে তাদের কাজের সময় কমানো হয়েছে বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা । এই কাজের জন্য তাদের সাম্মানিক দেওয়া হচ্ছে।
এর পাশাপাশি তৎকালীন সরকারের আমলে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আগের সরকারের আমলে প্রচুর পরিমাণে অর্থ পাচার হয়েছে। ওই সময় ব্যাঙ্ক থেকে ঠিক কত টাকা পাচার হয়েছে তা জানার জন্য সিআইডিকে তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, ৫ অগস্টের পর অনেকেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। কারণ সেই সময় সরকার ছিল না। তবে সরকার গঠনের পর কারা দেশত্যাগ করেছে তা নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।