অস্ত্র নিয়ে বিএসএফের উপরে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে। আত্মরক্ষার্থে পালটা ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী গুলি চালানোয় এক পাচারকারীর মৃত্যু হতেই বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম তাকে নিরীহ বানানোর চেষ্টা করলেন বলে দাবি করা হল। তিনি বলেন, ‘পঞ্চগড় (বাংলাদেশের দিকের এলাকা) সীমান্তে বিএসএফের হাতে আরও এক বাংলাদেশি আনোয়ার হোসেনের হত্যার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি আমরা।' সেইসঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, পঞ্চগড় সীমান্তে যা ঘটেছে, বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকেই বিএসএফ বারবার নিরস্ত্র বাংলাদেশি নাগরিকের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে। যা আন্তর্জাতিক নিয়মের বিরোধী বলে দাবি করেন নাহিদ।
গরুপাচারের সময় BSF-র উপরে হামলা পাচারকারীদের
নাহিদের অভিযোগের পরে ভারতের তরফে কোনও মন্তব্য করা না হলেও বিএসএফের তরফে ইতিমধ্যে জানানো হয়েছে, শুক্রবার রাতে জলপাইগুড়ির বেরুবাড়ি লাগোয়া গ্রামে (চাণক্য সীমান্ত পোস্ট) ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর শিবিরে হামলা চালায় বাংলাদেশি পাচারকারী এবং দুষ্কৃতীরা। ঘন কুয়াশার মধ্যে ভারতের সিংপাড়া গ্রাম থেকে গরুপাচার করা হচ্ছিল। সেইসময় বিএসএফের চোখে পড়ে যায় পাচারকারীরা। বিএসএফ সতর্ক করতেই পালটা ভারতীয় জওয়ানদের উপরে পাচারকারীরা হামলা চালায়। তার জেরে কয়েকজন জওয়ান আহত হন।
আত্মরক্ষার্থে গুলি চালানো হয়, জানিয়েছে BSF
সেই আক্রমণের মুখেও বিএসএফের তরফে কোনও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করেনি বিএসএফ। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, পাচারকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ‘স্টান গ্রেনেড’ ফাটানো হয়। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। বরং বিএসএফ জওয়ানদের ঘিরে হামলা চালাতে থাকে পাচারকারীরা। এমনকী গুলিও চালানো হয়। আত্মরক্ষার্থে পালটা এক বিএসএফ জওয়ান গুলি চালান। পরে দেখা যায় যে আন্তর্জাতিক সীমান্তের কাছে একজনের দেহ পড়ে আছে।
পরে বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে বলে বিএসএফের তরফে জানানো হয়েছে। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, ‘সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশেই’ সেই আলোচনা চালানো হয়েছে। একইসুরে জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার উমেশ খণ্ডবহালে দাবি করেন, যে ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে, সে বাংলাদেশের পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার ভজনপুরের বাসিন্দা ছিল।
টাকার লোভে পাচারে যুক্ত পড়েছিল আনোয়ার?
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, দরজির কাজের পাশাপাশি দিনমজুরি করত আনোয়ার। তার ছয় বছরের মেয়ে আছে। এক স্থানীয় বাসিন্দা দাবি করেছেন, এমনিতে সরল প্রকৃতির ছিল আনোয়ার। তবে পাচারকারীদের জড়িয়ে পড়েছিল সম্ভবত। টাকার টোপ দিয়ে সেই কাজটা করা খুব সহজ বলে দাবি করেছেন ওই ব্যক্তি।