অফিসের কাজের চাপের জেরে কর্মীদের মৃত্যুর বেশ কিছু ঘটনা সাম্প্রতিককালে দেখা গিয়েছে ভারতে। এবার অফিসের চাপে বাংলাদেশে আত্মহত্যা করলেন এক হিন্দু মহিলা। বাংলাদেশের বোয়ালখালিতে আত্মঘাতী হয়েছেন শুক্লা দে নামের এক মহিলা। মৃত মহিলার বয়স ৩৮ বছর। তিনি বিবাহিত। দুই সন্তানের মা ছিলেন। একটি বেসরকারি ঋণ প্রদানকারী সংস্থার কর্মী ছিলেন শুক্লা। অভিযোগ, শুক্লার বেতন থেকে অনৈতিক ভাবে টাকা কাটছিল সংস্থা। এই আবহে চাপের মুখে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হন তিনি। এই ঘটনায় শুক্লার স্বামী সিদুল পাল পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন সেই ঋণ প্রদানারী সংস্থার ৪ জন কর্মীর বিরুদ্ধে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, রূপসা সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড নামে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন শুক্লা দে। সংস্থার প্রদান করা ঋণের কিস্তি আদায়ের দায়িত্ব ছিল তাঁর ওপর। শুক্লার পরিবারের অভিযোগ, এই কিস্তির টাকা আদায়ের জন্যে শুক্লার ওপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল অফিসের তরফ থেকে। এমনকী 'টার্গেট' পূরণ না করতে পারায় শুক্লার বেতন থেকেই টাকা কাটছি সংস্থা। এই আবহে প্রবল মানসিক চাপে ভুগছিলেন শুক্লা দে। আর তাই তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন বলে অভিযোগ। এই আবহে সংস্থার ৪ কর্মীর বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলা করেছেন শুক্লার স্বামী। অভিযুক্তরা হলেন - কাঞ্চন দেবনাথ (বয়স ৪৫ বছর), নন্দন (বয়স ৪০ বছর), চিনু বিশ্বাস (বয়স ৪২ বছর) ও পলাশ নাথ (বয়স ৪৩ বছর)।
সিদুল পালের অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের মে মাসে এই সংস্থায় কাজে যোগ দিয়েছিলেন শুক্লা দে। তবে এই বছর ৫ অগস্টের পর থেকে ঋণের কিস্তি আদায়ের কাজের গতি কমে যায়। কিস্তি আদায় করতে গেলে ঋণ গ্রাহকদেরই তোপের মুখে পড়তে হচ্ছিল শুক্লাকে। অপরদিকে ঋণের কিস্তি আদায় করতে ব্যর্থ হওয়ায় শুক্লার ওপর অফিস থেকেও চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল। তাঁর মাসিক বেতন থেকে অনাদায় ঋণের সমপরিমাণ টাকা কেটে রাখা হচ্ছিল। এমনকী দূরের একটি ব্রাঞ্চে তাঁকে বদলি করা হয়েছিল। এই আবহে গত শনিবার সন্ধ্যায় রান্নাঘরে আত্মঘাতী হন শুক্লা। এই আবহে শুক্লার সংস্থার ৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে পুলিশে। এদিকে পুলিশ মামলা গ্রহণ করলেও এখনও কাউকে গ্রেফতার করেনি বলেই জানা গিয়েছে।