বাংলাদেশে পড়ুয়াদের আন্দোলন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল আমেরিকা। পালটা প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দিয়ে আমেরিকাকে নিজের চরকায় তেল দেওয়ার পরামর্শ দিল ঢাকা। আসলে সোমবার মার্কিন বিদেশ মন্ত্রকের তরফে দাবি করা হয়, বাংলাদেশে যে পড়ুয়াদের বিক্ষোভ চলছে, সেটার উপরে নজর রাখা হচ্ছে। গণতন্ত্রে হিংসার কোনও জায়গা নেই বলে সওয়াল করে বিক্ষোভের জেরে কমপক্ষে দু'জনের মৃত্যু হয়েছে বলে মার্কিন বিদেশ মন্ত্রকের তরফে দাবি করা হয়। আর তাতেই চটেছে বাংলাদেশ। ঘুরিয়ে ওয়াশিংটনকে ট্রাম্পের গুলি চালানোর ঘটনার দিকে নজর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে ঢাকা।
আমেরিকার সামনে ব্যাঘ্রগর্জন!
মঙ্গলবার বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকের সেহেলি সাবরিন বলেন, 'ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় অনুযায়ী ১৫ জুলাই নিয়মিত সাংবাদিক বৈঠক চলাকালীন একটি প্রশ্নের প্রেক্ষিতে আমেরিকার বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার যে মন্তব্য করেছেন, তাতে আমরা অত্যন্ত হতাশ। তিনি দাবি করেছেন, বাংলাদেশে এখন যে পড়ুয়াদের বিক্ষোভ চলছে, সেই ঘটনায় কমপক্ষে দু'জনের মৃত্যু হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, ‘সেরকম কোনও প্রমাণ নেই। যাচাই না করেই যে এরকম ভিত্তিহীন দাবি করা হয়েছে, তা হিংসায় আরও উস্কানি দিতে পারে। আর অহিংস বিক্ষোভ বা আন্দোলনের জন্য বাংলাদেশ সরকার যে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার চেষ্টা করছে, সেই প্রচেষ্টাকেও দুর্বল করে দিতে পারে এরকম মন্তব্য।’
লেকচার দিতেই ট্রাম্পের ঘটনা মনে করাল বাংলাদেশ
আমেরিকা যখন হিংসা নিয়ে ‘লেকচার’ দিয়েছে, তখন পালটা ট্রাম্পের ঘটনা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সাবরিন বলেন, ‘গণতন্ত্র এবং রাজনীতিতে হিংসার কোনও জায়গায় নেই। আমেরিকার পেনিসিলভানিয়াতে শান্তিপূর্ণ জনসভার সময় প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জীবনের উপর যে ঝুঁকি তৈরি হয়েছিল, সেটা আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে দেখেছি। এই ঘটনায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এই ধরনের হিংসাত্মক ঘটনা গণতন্ত্রের মূল ভিত্তির পরিপন্থী।’
আমেরিকা ঠিক কী বলেছিল?
বাংলাদেশের একাধিক সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশে যে কোটা-বিরোধী পড়ুয়া বিক্ষোভ চলছে, সেটা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মার্কিন বিদেশ মন্ত্রকের ম্যাথু মিলার বলেন, 'ঢাকা এবং বাংলাদেশজুড়ে যে পড়ুয়া বিক্ষোভ চলছে, সেটার বিষয়ে অবহিত আমরা। বিষয়টির উপরে নজর রাখছি আমরা। যে কোনও গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণভাবে জমায়েতের স্বাধীনতার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে যে কোনওরকম হিংসাত্মক ঘটনার নিন্দা করছি আমরা। যাঁরা এই হিংসার শিকার হয়েছেন, তাঁদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করছি আমরা।'