বাংলাদেশে ঘটে গেল অঘটন। দুর্গাপুজোর মরশুমে যশোরেশ্বরী মন্দিরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দেওয়া স্বর্ণমুকুট চুরি হয়ে গিয়েছে। এমনকী এই চুরির পর কেটে গিয়েছে তিনদিন। কিন্তু এই চুরির কিনারা এখনও করতে পারেনি বাংলাদেশের পুলিশ। আর এই ঘটনা নিয়ে এখন জোর আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। মন্দির চত্বরের সিসিটিভি ফুটেজে চুরির ঘটনা ধরা পড়েছে। কিন্তু এখনও ধরা পড়েনি চোর। এই বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে এবার চোরকে ধরতে পুরষ্কার ঘোষণা করলেন সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মহম্মদ মনিরুল ইসলাম। ফেসবুকে পোস্ট করে ওই পুরষ্কারের কথা বলা হয়েছে।
কোটা সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলনের জেরে পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের। আর তার পর থেকে লাগাতার হিন্দুদের উপর আক্রমণ হচ্ছে বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, হিন্দুদের মন্দিরে এবং দুর্গাপুজোয় আক্রমণ নেমে আসছে বলে অভিযোগ ওঠে। আর এবার প্রকাশ্যে এল যশোরেশ্বরী মন্দিরে সোনার মুকুট চুরির ঘটনা। তাও আবার পুলিশ কিনারা করতে পারছে না। সুতরাং অন্তর্বর্তী সরকারের পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মহম্মদ মনিরুল ইসলাম ফেসবুকে লিখেছেন, ‘সাতক্ষীরার শ্যামনগরের যশোরেশ্বরী মন্দিরে প্রতিমার মাথার সোনার মুকুট চুরি হয়েছে। চোরকে ধরিয়ে দিতে পারলে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সন্ধানকারীকে বিশেষ পুরষ্কার দেওয়া হবে।’
আরও পড়ুন: ‘আগের থেকে ছেলে অনেকটাই সুস্থ’, ছেলে অনিকেতের সঙ্গে দেখা করে জানালেন বাবা অপূর্ব
এই ফেসবুক পোস্টের পরও এখনও পর্যন্ত সোনার মুকুটের সন্ধান মেলেনি। সময় যত যাচ্ছে তত বাড়ছে টেনশন। কারণ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপহার দেওয়া স্বর্ণমুকুট চুরির ঘটনায় বাংলাদেশের ভারতীয় হাইকমিশন কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এই কড়া প্রতিক্রিয়া নিজেদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট করা হয় হাইকমিশনের পক্ষ থেকে। সেখানে লেখা হয়, ‘২০২১ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশে এসে ছিলেন। সাতক্ষীরা জেলার যশোরেশ্বরী কালী মন্দিরে সোনার মুকুট উপহার দিয়ে ছিলেন। আর সেটি চুরি হয়ে যাওয়ার খবর আমরা দেখেছি। আমরা এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করছি। চুরির তদন্ত, মুকুট উদ্ধার এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ করছি।’
ভারতীয় হাইকমিশনের এই ফেসবুক পোস্ট বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপর চাপ বাড়িয়েছে। এই মন্দিরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, এক যুবক সোনার মুকুট চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। তারপরও ওই চোর যুবককে ধরা যায়নি। মন্দিরে সোনার মুকুট থাকা সত্ত্বেও সেখানে কেন কড়া নিরাপত্তা ছিল না? সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়া ছবি অনুযায়ী, জিন্সের প্যান্ট ও সাদা টি–শার্ট পরে ছিল যুবকটি। কিন্তু তারপরও কেন ধরা গেল না চোরকে? এসব প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, অকুস্থলে ছুটে এসেছেন সাতক্ষীরার জেলাশাসক মোস্তাক আহমেদ ও পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম–সহ ঊর্ধ্বতন অফিসাররা। যদিও স্বর্ণমুকুট অধরা।