কোটা সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলন রক্তক্ষয়ী হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশে। তখন থেকেই শেখ হাসিনা বিরোধী হাওয়া বইতে শুরু করেছিল। এবার সেই হাওয়াকে ঝড়ে পরিণত করতে চাইছে মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার। বাংলাদেশের স্বাধীনতা এসেছিল মুক্তিযুদ্ধের পর। আর তার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ভারত তখন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। অতীতের সেই স্মৃতি এবার অতল গহ্বরে চলে যেতে চলেছে। কারণ বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি জাতীয় ছুটি বাতিল করা হচ্ছে। এগুলি জাতীয় দিবস হিসেবে ওপার বাংলায় পরিচিত ছিল। মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার এবার এই সব ছুটি ও জাতীয় দিবসগুলি বাতিল করতে চলেছে বলে খবর।
শেখ হাসিনার আওয়ামি লিগ সরকারের আমলে ঘোষিত আটটি জাতীয় দিবসকে বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। যে জাতীয় দিবসগুলি বাতিল হতে চলেছে সেগুলির বেশিরভাগই শেখ হাসিনার পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক যুক্ত। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের মুখ্য উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন, উপদেষ্টা পরিষদ একটি বৈঠক করেছে। তারপর আটটি দিবস বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দ্রুত এই দিনগুলি জাতীয় দিবসের তালিকা থেকে বাতিল করার বিজ্ঞপ্তি জারি হবে।
আরও পড়ুন: ভারত–বাংলাদেশ সীমান্তে তরুণীর শ্লীলতাহানি, গ্রেফতার দু’জন, তাদের পরিচয় কী?
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, পদ্মাপারের দেশে বাতিল হতে চলেছে ৭ মার্চ, ১৭ মার্চ, ১৫ অগস্টের ছুটি। সব মিলিয়ে আটটি জাতীয় দিবস বাতিল করতে চলেছে নয়া অন্তর্বর্তী সরকার। বাতিল হওয়া দিবসগুলির বিজ্ঞপ্তি জারি করবে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ। তালিকায় উপরের তিনটি তারিখ ছাড়াও ৫ অগস্ট, ৮ অগস্ট, ১৮ অক্টোবর, ৪ নভেম্বর এবং ১২ ডিসেম্বর আর জাতীয় দিবস হিসেবে পালন করা হবে না। ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন এবং জাতীয় শিশু দিবস। ১৫ অগস্ট বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকী।
তবে এখানেই শেষ নয়, ৮ অগস্ট শেখ হাসিনার মা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মদিন, ৫ অক্টোবর শেখ হাসিনার ভাই শেখ কামালের জন্মদিন। ১৮ অক্টোবর হাসিনার আর এক ভাই শেখ রাসেলের জন্মদিনকেও জাতীয় দিবসের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। তার সঙ্গে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রমনায় বঙ্গবন্ধুর ভাষণকে স্মরণীয় করে রাখতে ওই দিনটিকে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ দিবস হিসাবে ঘোষণা করেছিল শেখ হাসিনার সরকার। সেটিও বাতিল হচ্ছে। ৪ নভেম্বর জাতীয় সংবিধান দিবস এবং ১২ ডিসেম্বর স্মার্ট বাংলাদেশ দিবস ছিল। কিন্তু সেগুলি আর থাকবে না। এটাই কি নয়া অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার? উঠছে প্রশ্ন।