অবশেষে ঘরে ফিরতে চলেছেন বাংলাদেশের জেলে বন্দি থাকা ৯৫ জন ভারতীয় মৎস্যজীবী। একইভাবে ভারতের জেলা বন্দি থাকা বাংলাদেশের বন্দিও মুক্তি পেতে চলেছেন। বন্দি বিনিময় যুক্তির মাধ্যমে তাদের মুক্তি করতে চলেছে দুই দেশ। গতকাল বৃহস্পতিবার দুই দেশ বন্দিদের ফেরানোর কথা ঘোষণা করেছে। এই চুক্তি অনুযায়ী, আগামী রবিবার ৯৫ জন ভারতীয় মৎস্যজীবীকে উপকূলরক্ষী বাহিনীর হাতে তুলে দেবে বাংলাদেশ। একইভাবে জেলবন্দি বাংলাদেশিদের সে দেশের হাতে তুলে দেবে ভারত। উল্লেখ্য, দুই দেশের সম্পর্ক যখন টানাপোড়েনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে ঠিক সেই সময় এমন পদক্ষেপ।
আরও পড়ুন: জলসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ, ১৬ ভারতীয় মৎসজীবীকে গ্রেফতার করল বাংলাদেশ
চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশ আগামী ৫ জানুয়ারি ৯৫ ভারতীয় জেলেকে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করবে এবং একইদিনে ভারত ৯০ বাংলাদেশি মৎসজীবীকে ছেড়ে দেবে।একটি সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, উভয় পক্ষের মৎসজীবী সম্প্রদায়ের প্রাথমিকভাবে মানবিক ও জীবিকার উদ্বেগের কথা মাথায় রেখে তাদের এবং ট্রলারগুলি ফিরিয়ে দেওয়া হবে। ভারত সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিতর্কিত জলসীমায় মাছ ধরার সময় দুর্ঘটনাক্রমে সামুদ্রিক সীমানা অতিক্রম করার কারণে মৎস্যজীবীরা প্রায়ই গ্রেফতারের সম্মুখীন হন। সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকজন ভারতীয় মৎসজীবীকে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ গ্রেফতার করেছে। তারা অসাবধানতাবশত আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমা অতিক্রম করে বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করেছিলেন। একই পরিস্থিতিতে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি মৎস্যজীবীকেও ভারত গ্রেফতার করেছে।
প্রসঙ্গত, ভারতীয় মৎস্যজীবীদের গত আড়াই মাসের মধ্যে আটক করা হয়েছিল। বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকে পড়ায় বাংলাদেশের উপকূলরক্ষী বাহিনী কাকদ্বীপের ৬টি ট্রলার আটক করে। পরে ট্রলারগুলিতে থাকা ৯৫ জন ভারতীয় মৎস্যজীবীকে গ্রেফতার করা হয়। জলসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগে যে ৯৫ জন মৎসজীবী বাংলাদেশের জেলে বন্দি রয়েছে তার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূলরক্ষী বাহিনী ৭৯ জন ভারতীয় মৎস্যজীবীকে প্রথমে গ্রেফতার করেছিল। তারা সকলে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। অভিযোগ, আন্তর্জাতিক জলসীমা পেরিয়ে বাংলাদেশ সীমান্তে প্রবেশ করার অভিযোগে গত অক্টোবর মাসে প্রথমে ৩১ জন মৎসজীবী। তারও কিছুদিন পরে ৪৮ জন মৎসজীবীকে গ্রেফতার করেছিল বাংলাদেশ উপকূলরক্ষী বাহিনী । পরে নভেম্বরে গ্রেফতার করা হয় ১৬ জনকে।
এই খবর পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য কেন্দ্রকে চিঠি পাঠান। তাঁদের ভারতে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে তৎপর হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে কাকদ্বীপের বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরাকে ফোন করে ওই মৎস্যজীবীদের পরিবারের সদস্যদের খোঁজখবর নেওয়া হয়। তাছাড়া মুখ্যমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গের জেলে থাকা বাংলাদেশিদের ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। তারপরেই ১২ জন মৎসজীবীকে ছেড়ে দেওয়া হয়।