কয়েকদিন আগে পর্যন্ত বাংলাদেশিরা '৪ দিনে কলকাতা দখলের' হুমকি দিচ্ছিল। এখন সেই বাংলাদেশের জামাতে ইসলামির 'আমির'-এর গলায় শোনা গেল 'আতঙ্কে মাখা হুঁশিয়ারি'। তাঁর কথায়, 'বাংলাদেশের এক ইঞ্চি মাটির ওপর কারও কোনও দখলদারি চলতে দেওয়া হবে না।' আর তাঁর এই মন্তব্য করা হয়েছে ভারতকে উদ্দেশ্য করে। প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের একটি মহলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে যে ফেনি অঞ্চলটি দখল করে চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে ভাগ করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তার আগে অবশ্য বহু বালাদেশি সেভেন সিস্টার্স, বাংলা, বিহার, ওড়িশা দখলের 'স্বপ্ন' দেখতে শুরু করেছিলেন। এই আবহে জামাতের আমিরের এই মন্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। রাজনৈতিক ভাবে বাংলাদেশের মানুষের মনে 'ভারত বিরোধিতার' বীজ বপণ করতেই এহেন মন্তব্য করা হতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। (আরও পড়ুন: আরাকান আর্মির দখলে রাখাইন, 'রোহিঙ্গা' নামক মাথাব্যথা কীভাবে দূর করবেন ইউনুস?)
এরই সঙ্গে জামাত প্রধান শফিকুর রহমানের আরও অভিযোগ, ইসকনকাণ্ডের আবহে 'জুডিশিয়াল ক্যু' করতে চেয়েছিল আওয়ামি লিগ। এদিকে ইসকন নিয়ে জামাত প্রধান বলেন, 'ইসকনের লোকেরা একজন আইনজীবীকে খুন করল প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে। তার চেহারা এতটাই বিকৃত করে দেওয়া হয়েছিল, মৃত্যুর পর তার পরিবারের কাউকে চেহারা দেখতে দেওয়া হয়নি। তবে এই দেশের হিন্দু ভাইরা বিবেকের জায়গা থেকে প্রতিবাদ করে বলেছেন, আমরা শান্তিতে আছি। ভারতকে বলেছেন, আমাদের নিয়ে আর খেলো না। আমরা এ দেশে ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষ ভালো আছি।' (আরও পড়ুন: ভারতে কি 'ফার্স্ট কাম, ফার্স্ট সার্ভ' ভিত্তিতে বণ্টন হবে স্যাটেলাইট স্পেকট্রাম?)
আরও পড়ুন: ভারতের থেকে 'মোস্ট ফেভারড নেশন'-এর তকমা ছিনিয়ে নিল সুইৎজারল্যান্ড! তবে কেন?
উল্লেখ্য, বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের অভিযোগ উঠে আসছে। হাসিনার বিদায়ের পর থেকেই মন্দির থেকে শুরু করে হিন্দুদের বাড়িঘরে ভাঙচুর চলেছে। সেই সময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা থেকে বিএনপি-জামাত দেখেছিল 'আওয়ামি লিগের ষড়যন্ত্র'। তবে কয়েক মাস যাওয়র পর সেই দেশে হিন্দুদের অবস্থা যেন আরও খারাপ। ধর্মের নামে চাকরি থেকে জোর করে পদত্যাগ করানো হচ্ছে সংখ্যালঘুদের। অনেককে ধর্মান্তরিত করানোর অভিযোগও উঠেছে। এরই মাঝে চট্টগ্রামে হিন্দু এবং বৌদ্ধদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। সংখ্যালঘু অত্যাচারে সেখানে অভিযুক্ত খোদ সেনা। হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুর গ্রেফতারি ঘিরে আরও উত্তাল হয় পরিস্থিতি। এদিকে সেখানে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে বাংলাদেশের কট্টরপন্থীরা পথে নেমেছে। 'জুলাই বিল্পবের' ছাত্র নেতারাও ইসকনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। সারজিস আলম চট্টগ্রামে ইসকন এবং হিন্দুদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক ভাষণ দিয়েছেন সম্প্রতি। এই আবহে ভারতের রাস্তাতেও লোক নেমেছে। বাংলাদেশি মৌলবাদে বিরুদ্ধে স্লোগান উঠেছে এখানে। ভারত সরকারও একাধিক বিবৃতি প্রকাশ করে ওপারের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।