ঢাকায় মহম্মদ ইউনুসের বাসভবনের সামনেই গভীর রাত পর্যন্ত বিক্ষোভ প্রদর্শন করলেন 'জুলাই বিপ্লবে' আহত আন্দোলনকারীরা। যাঁরা রক্ত ঝরিয়ে শেখ হাসিনাকে গদিচ্যুত করলেন, সেই সব ছাত্রদের এখন অভিযোগ, আহত অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে থাকলেও সরকার তাঁদের খোঁজ নিচ্ছে না। পরে স্থনীয় সময় রাত প্রায় ২টো নাগাদ ইউনুসের সরকারি বাসভবনের বাইরে থেকে অবরোধ অবস্থান প্রত্যাহার করেন আন্দোলনকারীরা। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা হাসনাত আবদুল্লার আশ্বাসে সেই বিক্ষোভ ওঠে।
উল্লেখ্য, কোটা বিরোধী আন্দোলনে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে উত্তাল হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশ। সেই আন্দোলন শেষ পর্যন্ত হাসিনা বিরোধী আন্দোলনে পরিণত হয়েছিল। এর জেরে ৫ অগস্ট শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে এসে আশ্রয় নিতে হয়েছিল। তবে তার আগে পর্যন্ত বাংলাদেশে একাধিক ছাত্র আন্দোলনকারী নিহত হয়েছিল পুলিশের গুলিতে। অভিযোগ, সরাসরি শেখ হাসিনার নির্দেশেই ছাত্র আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশি অত্যাচার চলেছিল বাংলাদেশ। তবে হাসিনা বিদায়ের পরে সেই আন্দোলনে আহতদের দেখভালের দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে নিয়েছিল ইউনুস সরকার। কিন্তু এখন সেই সব আহত আন্দোলনকারীদের একটা বড় অংশের অভিযোগ, সরকার তাঁদের খোঁজ নেয় না।
এই আবহে গতকাল মধ্যরাত থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন শুরু করেন বহু আহত 'বিপ্লবী'। সুচিকিৎসা, পুনর্বাসন ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিসহ ৭ দফা দাবিতে এই অবস্থান শুরু করেন তাঁরা। পরে গভীর রাত ২টো নাগাদ তাঁরা হাসনাতের কথায় সেই বিক্ষোভ প্রত্যাহার করেন। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে হাসনাত দাবি করেন, বিক্ষোভকারীদের দাবিদাওয়া নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন তিনি। তাঁর আশ্বাসের পরই বিক্ষোভকারীরা বিক্ষোভ অবস্থান তুলে নেন যমুনার সামনে থেকে। এর আগে রবিবার দিনভর ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ একাধিক স্থানে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন এই সব আহত ছাত্ররা। এমনকী সন্ধ্যা নাগাদ এই সব আতর ছাত্রদের পুলিশ আটকেও দিয়েছিল। পরে রাত বাড়লে পুলিশি ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যান বিক্ষোভকারীরা। ইউনুসের সরকারি বাসভবনের সামনে এসে অবস্থন বিক্ষোভ শুরু করেছিলেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত হাসনাতের কথায় তাঁরা ইউনুসের বাসভবনের সামনে থেকে অবস্থান বিক্ষোভ প্রত্যাহার করেন। সরকারেরই প্রতি অসন্তোষ প্রকশ করে হাসনাত বলেন, 'আন্দোলনে আহতদের সুচিকিৎসা দিতে না পারা সরকারের ব্যর্থতা।' তিনি অভিযোগ করেন, এই পরিস্থিতির জন্য সরকারের আমলাতান্ত্রিক পদ্ধতি দায়ী, সচিবরা দায়ী, আমলারা দায়ী।