সম্প্রতি গাজিপুরে প্রাক্তন মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক মন্ত্রীর বাড়িতে হামলার সময় পালটা মার খেয়েছিলেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা। এবার বরিশাল বিদ্যালয়ে মার খেলেন এক বৈষম্য বিরোধী ছাত্র নেতা। উল্লেখ্য, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিগত কয়েকদিন ধরে আন্দোলন শুরু করেছে একদল পড়ুয়া। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা নাকি দাবি করেছিলেন, সেই আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা জামাতের ছাত্র শিবিরের সদস্য। আর এই অভিযোগ তোলার ‘দায়ে’ এক সমন্বয়ককে মারধর করেন আন্দোলনকারীরা। (আরও পড়ুন: মোদীর ওপর বাংলাদেশ ইস্যু ছেড়ে দিলেন ট্রাম্প, কী বলছে ওপার বাংলার সংবাদমাধ্যম?)
আরও পড়ুন: ধারাল অস্ত্র নিয়ে হামলা, সীমান্তে BSF-এর হাতে মার খেল ৪ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী
আরও পড়ুন: মোদীর ওপর বাংলাদেশকে ছাড়লেন ট্রাম্প, ইউনুস সরকারের উপদেষ্টা দিলেন 'ব্যাখ্যা'
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শুচিতা শরমিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি সিন্ডিকেটে দুই আওয়ামি লিগপন্থী পড়ুয়াকে নিয়োগ করেছেন। এই আবহে একদন আন্দোলনকারী পড়ুয়া উপাচার্যের বাড়ির দরজা ভেঙে ঢুকে পড়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। এদিকে এই গোটা ঘটনায় নাকি উপাচার্যের পক্ষ নিয়ে কথা বলেন সমন্বয়ক মহম্মদ ইমরান। তিনি ফেসবুকেও এই নিয়ে পোস্ট দিয়েছিলেন। এই আবহে ইমরানকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এ ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। তাতে বলা হয়েছে, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সব যৌক্তিক বিষয়ে আন্দোলন করার সবার অধিকার আছে। সেই আন্দোলনের বিপরীতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাও সবার রয়েছে। কিন্তু আন্দোলনের নামে একজন শিক্ষার্থীকে মারধর এবং বিশৃঙ্খলার নিন্দা জানাচ্ছি।' (আরও পড়ুন: মোদী-ট্রাম্প বৈঠকে চোখের পাতা এক হচ্ছে না চিনের? বেজিং বলল...)
আরও পড়ুন: ডিএ বৃদ্ধির পরে সরকারি কর্মীরা পেতে পারেন আরও এক বড় খবর, দাবি খোদ ব্যয় সচিবের
এদিকে ঢাকার ৩২ নম্বর ধানমন্ডিতে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি জড়ি বাসভবনটির অস্তিত্ব আর নেই। গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে সেটিকে ভাঙা শুরু করেছিল একদল তথাকথিত বিপ্লবী ছাত্র। এরপরে গোটা দেশ জুড়েই ছড়িয়ে পড়েছিল হিংসার আগুন। সেই আগুন নেভাতে এবং ছাত্রদের শান্ত করতে বার্তা দিয়েছিলেন খোদ ইউনুস। তাতেও কাজ দেয়নি। তাণ্ডব চালানো দুষ্কৃতীদের না ধরে আওয়ামি লিগের নেতা, কর্মীদের ধরতে অভিযান শুরু করা হয়। সেই অভিযানে প্রথম দিনেই হাজারের বেশি লোককে ধরেছিল যৌথ বাহিনী। আর ৭ দিন পর ধৃতের সংখ্যা প্রায় ৪ হাজারের গণ্ডি ছুঁয়ে ফেলেছে। (আরও পড়ুন: ইলন মাস্কে বিরক্ত হোয়াইট হাউজের ট্রাম্প ঘনিষ্ঠ শীর্ষ আধিকারিক, দাবি রিপোর্টে)
আরও পড়ুন: সুরাপ্রেমীদের জন্যে সুখবর, এই হুইস্কির ওপরে এক ধাক্কায় ৫০% শুল্ক কমাল সরকার
উল্লেখ্য, ফেব্রুয়ারিতে কয়েকদিন ধরে যে তাণ্ডব বাংলাদেশে চলছে, তার নেপথ্যে রয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে যখন ৩২ নং ধানমন্ডিতে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে হামলা হয়, তার কিছু আগেই ছাত্র নেতা হাসনাত ফেবসুকে পোস্ট দিয়ে লিখেছিলেন, 'ফ্যাসিবাদীদের তীর্থভূমি মুক্ত হবে বাংলাদেশ'। এহেন উস্কানি থেকে যে হিংসা ছড়িয়ে পড়েছে, তা নিয়ন্ত্রণ করতে ইউনুস সরকার ব্যর্থ। এমনকী বিএনপি এই পরিস্থিতির জন্যে সরকারের দিকে আঙুল তুলেছে এবং হিংসার নিন্দা জানিয়েছে। আর পরে গাজিপুরের ঘটনার মোড় ঘুরিয়ে নিজেদের ভাবমূর্তি উদ্ধারে নেমেছে হাসনাত-সারজিসরা। এই ঘটনায় প্রতিবদ করতে তারা নিজেরাই রাস্তায় বসে পড়েছিলেন। পুলিশকে এসে তাঁদের কাছে ক্ষমা চাইতে হয়েছিল। (আরও পড়ুন: মোদী আমেরিকা ছাড়তেই নয়া শুল্ক চাপানোর পথে আমেরিকা, বড় ঘোষণা ট্রাম্পের)
উল্লেখ্য, এর আগে মহম্মদ ইউনুসের তরফ থেকে একটি বিবৃতি জারি করে সাধারণ মানুষকে ভাঙচুর থেকে বিরত থাকতে বারণ করা হয়। এমনকী নাম নিয়ে শেখ হাসিনা বা তাঁর পরিবারের সদস্যদের সম্পত্তিতে হামলা করা থেকে বিরত থাকতে বলেন ইউনুস। তবে তা সত্ত্বেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। ৭ ফেব্রুয়রির গভীর রাতে গাজিপুরে আবার প্রাক্তন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হুসেনের বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছিল। হামলাকারীদের পালটা মারধর করেছিলেন স্থানীয়রা। পরে ৮ ফেব্রুয়ারি সকালে আহত হামলাকারীদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম দুই 'মুখ' হাসনাত ও সারজিস আলম। তারা দাবি করেন, হামলাকারীদের আটকাতেই নাকি বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা সেখানে পৌঁছেছিলেন। তখন ছাত্রলিগ, যুবলিগ পালটা তাদের ওপর হামলা করেছিল। এই আবহে প্রশ্ন ওঠে, আদতে এই সব ভাঙচুরের নেপথ্যে কারা আছে? ইউনুসের সরকার কি ইচ্ছে করেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনছে না? এরই মাঝে অপারেশন ডেভিল হান্টের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে তারা। তবে তাণ্ডব চালানো তথাকথিত বিপ্লবীদের বদলে আওয়ামি লিগ কর্মীদের ধরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের 'সন্তুষ্ট' করতে চাইছে ইউনুস সরকার। প্রশ্ন থাকবে, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে তাণ্ডব চালানো দুষ্কৃতীদের কী হবে? এরপর দু'দিন ধরে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় হিংসা ছড়ানো দুষ্কৃতীদের কী হবে? অপারেশন ডেভিল হান্টে আওয়ামি লিগ কর্মীদের ধরে কি তবে ইউনুস সরকার দাবি করছে, তারাই এই ক'দিন হিংসা ছড়িয়েছে দেশে?