বিগত কয়েকদিন ধরে সেনার নামে যাচ্ছেতাই ভাবে ভাষণ দিয়েছে চলেছেন হাসনাত আবদুল্লাহ। মুখে নাম না নিয়েই সেনা প্রধান ওয়াকার-উজ-জামানকে ভারতের দালাল থেকে শুরু করে কটৃক্তি করেছেন এই এনসিপি নেতা। এই আবহে আবার গতকাল সন্ধ্যায় সেনা ক্যান্টনমেন্টে সেনা আধিকারিকদের জরুরি বৈঠক হয়েছিল। এহেন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে, রবিবার জরুরি অবস্থা জারি করা হতে পারে। তবে শেষ পর্যন্ত এমন কিছু হয়নি। এই নিয়ে আজ বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিম-উল-গনিকে প্রশ্ন করেছিলেন সাংবাদিকরা। এই আবহে তিনি দাবি করেন, বিষয়টি গুজব। এর থেকে বেশি কিছু মন্তব্য করতে তিনি অস্বীকার করেন। (আরও পড়ুন: সেই ক্যান্টনমন্টেই দীর্ঘ বৈঠক বাংলাদেশ সেনার, গল্প বানিয়ে এবার চাপে পড়বে 'বাচ্চারা'?)
আরও পড়ুন: কথায় কথায় ভারতের নামে কুৎসা, সেই ভারতই ইদের আগে বড় 'উপহার' দিল বাংলাদেশকে
উল্লেখ্য, ঢাকা ক্যান্টনমেন্টেই গত ১১ মার্চ একটি বৈঠক হয়েছিল। যা নিয়ে বিগত বেশ কয়েকদিন ধরে জোর চর্চা শুরু হয়েছে বাংলাদেশে। সেনা প্রধানের সঙ্গে গত ১১ মার্চের বৈঠকে কী ঘটেছিল? এই নিয়ে এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ এবং সারজিস আলমের মধ্যে দেখা গিয়েছে 'দ্বিমত'। এহেন পরিস্থিতিতে ফেসবুকে দুই নেতার পোস্টে অস্বস্তি বেড়েছে নাহিদ ইসলামের নবগঠিত দলের অন্দরেই। উল্লেখ্য, সম্প্রতি হাসনাত আবদুল্লাহ সেনার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক সব দাবি করেন। বিভিন্ন জনসভায় উস্কানিমূলক মন্তব্য করার আগে ফেসবুকে বোমা ফাটিয়েছিলেন এই নেতা। সেখানে হাসনাত নিজের পোস্টে পালটা দাবি করেছিলেন, সেনা প্রধান 'রিফাইন্ড আওয়ামি লিগ' আনার জন্যে তাঁদের ওপর চাপ দেন। তবে সারজিস দাবি করেন, তাঁদের কোনও চাপ দেওয়া হয়নি, সেনা প্রধান নিজের অভিজ্ঞতা থেকে কিছু কথা বলেছিলেন। এদিকে হাসনাত দাবি করেছিলেন, সেনা প্রধান নাকি কড়া ভাষায় ইংরেজিতে বেশ কিছু কথা শুনিয়েছিলেন তাঁদের। সেই বিষয়ে সারজিস আবার দাবি করেছেন, সোজাসাপ্টা ভাবে কথাগুলো বলা হলেও তাতে ধমকের সুর ছিল না। এদিকে এই ইস্যুতে সেনার তরফ থেকে বলা হয়েছে, হাসনাতের এই দাবি হাস্যকর এবং অপরিপক্ক দাবি।
এদিকে ২৩ মার্চ সন্ধ্যায় এক ইফতারি পার্টি থেকে জুলাই আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বড় বার্তা দিলেন বাংলাদেশি সেনা প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। ঢাকায় সেনামালঞ্চে জুলাই আহতদের সম্মানে ইফতারির আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, 'সেনাবাহিনী সব সময় জুলাই আন্দোলনে আহতদের পাশে থাকবে।' ইফতারের অনুষ্ঠানে ওয়াকার বলেন, 'জুলাই আন্দোলনের আহতদের আর্থিক সহায়তা দিতে কাজ করছে সেনাবাহিনী। আপনারা জাতির কৃতি সন্তান। আমরা আপনাদের পাশে আছি সব সময়। আপনারা মনোবল হারাবেন না। নিশ্চয়তা দিচ্ছি, সেনাবাহিনী আহতদের পাশে থাকবে। তাদের পুনর্বাসনে সহযোগিতা করা হবে।' এদিকে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকারী হাসনাত আবদুল্লাহর সম্প্রতি সেনা বিরোধী মন্তব্যের ঝড় তুলেছেন। এর মাঝে আহত জুলাই আন্দোলনকারীদের জন্যে সেনার ইফতারি অনুষ্ঠান বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।