বাংলাদেশের রাঙামাটির পার্বত্য অঞ্চলে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের অস্ত্র প্রশিক্ষণের ক্যাম্প খুঁজে পেল বাংলাদেশি সেনা। জানা গিয়েছে, রাঙামাটির বন্দুকভাঙ্গা রেঞ্জের পাগলিছড়ি ও যমচুক এলাকায় পাহাড়ের ওপরে সশস্ত্র গোষ্ঠীর ক্যাম্পের সন্ধান পায় সেনা। তবে সেখানে গিয়ে কাউকে ধরতে পারেনি সেনা। জানা যায়, পাগলিছড়ি এলাকায় যে ক্যাম্পটির খোঁজ পাওয়া গিয়েছে, সেটি রীতিমতো একটি ফাঁড়ি। সেই ক্যাম্পে রাস্তা তৈরি করেছে ইউপিডিএফ। এছাড়া ইউপিডিএফ সদস্যদের বসবাসের জন্যে ভবন রয়েছে। এমনকি পর্যবেক্ষণ চৌকি পর্যন্ত আছে সেখানে। অপরদিকে যমচুকের ক্যাম্পে বাঙ্কার রয়েছে। (আরও পড়ুন: বাংলাদেশে হিন্দু সাংবাদিকের মা এবং মুক্তিযোদ্ধা বাবাকে ধারাল অস্ত্রের কোপ)
আরও পড়ুন: তুরস্ক থেকে ট্যাঙ্ক কিনছে বাংলাদেশ, সবটাই দেখছে ভারত, বিদেশ মন্ত্রক বলল...
প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালে গঠিত হয়েছিল ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট নামক সংগঠনটি। প্রাথমিক ভাবে শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক উপায়ে পার্বত্য অঞ্চলকে সম্পূর্ণ স্বায়ত্তশাসিত করার দাবি করেছিল ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট। তবে এই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই সশস্ত্র আন্দোলনে বিশ্বাসী। ২০০১ সালের নির্বাচনে তারা লড়াইও করেছিল। এই সংগঠনটি পার্বত্য চুক্তির বিরোধিতা করে এসেছে। এই আবহে সম্প্রতি তাদের একটি অংশ সশস্ত্র গোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছে। সেনার সঙ্গে গুলির লড়াইতেও লিপ্ত হয়েছে তারা। (আরও পড়ুন: 'আল্লাহর আইন ছাড়া কিছু চলবে না', বাংলাদেশে সংবিধান বদলের জল্পনা বাড়াল জামাত)
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে বিগত দিনগুলিতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ওপর অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছিল মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে। এমনকী সেনা এবং পুলিশের বিরুদ্ধেও সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছিল। এই আবহে চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চলে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলি সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এরই সঙ্গে আবার প্রতিবেশী মায়ানমারে বৌদ্ধপন্থী আরাকান আর্মি রাখাইন প্রদেশের প্রায় সবটুকু দখল করে নিয়েছে। (আরও পড়ুন: অনুপ্রবেশে মদত দিচ্ছে BSF, অভিযোগ করেছিলেন মমতা, জবাবে বিদেশ মন্ত্রক বলল...)
এদিকে সম্প্রতি আবার বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে মায়ানমার সেনার ১২ জন সদস্য। ঘটনাটি ঘটেছে বান্দারবানে। রিপোর্ট অনুযায়ী, বৃহম্পতিবার স্থানীয় সময় রাত পৌনে আটটা নাগাদ মায়ানমারের এই সেনা সদস্যরা ঢুকে পড়ে বাংলাদেশের বান্দারবানে। নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তের ৩৫ নম্বর পিলারের দক্ষিণ দিক হয়ে তারা অনুপ্রবেশ করে বলে দাবি করা হয়েছে 'কালের কণ্ঠ'-এর রিপোর্টে। অনুমান করা হচ্ছে, আরাকান আর্মির তাড়াতেই প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে মায়ামারের এই সেনা সদস্যরা। তুমব্রু খাল পার হয়ে ভাজাবুনিয়া গ্রামে গিয়ে পৌঁছায় মায়ানমারের এই ১২ জন। তারপর গ্রামবাসীরা খবর দেয় বিজিবি-কে।
পরে সেখান থেকে বিজিবি মায়ানমারের ১২ সেনা সদস্যকে নিয়ে যায়। সেই ১২ জনকেই তুমব্রু বর্ডার আউট পোস্টে আটক করে রাখা হয়েছে। এদিকে অনুপ্রবেশ করা মায়ানমারের সেনাকর্মীদের কারও কাছেই কোনও অস্ত্র ছিল না বলে জানা গিয়েছে। মায়ানমারের গৃহযুদ্ধের আবহে বাংলাদেশ সীমান্তে মাঝেমাঝেই বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা যায়। এদিকে সীমান্তের ওপারের অশান্তির আঁচ এসে পড়ছে বাংলাদেশেও। এই আবহে জুন্তার পাশাপাশি আরাকান আর্মির সঙ্গেও যোগাযোগ রাখা হচ্ছে বলে জানানো হয় বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে। এদিকে সম্প্রতি বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দাবি করেন, মায়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্তের নিয়ন্ত্রণে আছে তারা।