বাংলাদেশের খুলনায় সম্প্রতি প্রকাশ্য রাস্তায় গুলি করে খুন করা হয় অর্ণব সরকার নামে এক এমবিএ পড়ুয়াকে। নিজের এলাকায় 'শান্ত ছেলে' হিসেবে পরিচিত অর্ণবের খুনে স্তম্ভিত পরিবার থেকে পাড়া পড়শিরা। অর্ণবকে যে খুন করা হয়েছে, তা অবশ্য জানানো হয়নি তাঁর মা লিপিকা রানিকে। তাঁকে বলা হয়েছিল, ছেলে বাইক দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছে। তবে বাড়িতে মৃতদেহ আসতেই ছেলের রক্তাক্ত মাথা দেখে মা প্রশ্ন করে বসেন, 'আমার ছেলে তো হেলমেন পরত, তাহলে কীভাবে এটা হল?' ছেলের দেহ দেখেই শোকে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন লিপিকা রানি। তখন অর্ণবের বাবা নীতিশ চন্দ্র সরকারকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন এলাকাবাসী। (আরও পড়ুন: 'ভারতের দিকে তাকিয়ে…', প্রাক্তন আওয়ামি MP-মন্ত্রীদের গ্রুপে তলে তলে ছক কষা হচ্ছে)
আরও পড়ুন: 'আওয়ামি লিগ যদি দিল্লির কোলে বসে…', নির্বাচনে হাসিনার দলে 'না' ইউনুসের উপদেষ্টার
এদিকে অর্ণবের ছোট ভাই অনীকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা যাওয়ার কথা ছিল ২৫ জানুয়ারি। তবে তিনি যেতে পারেননি। পরীক্ষা দিতে না গিয়ে দাদার মুখাগ্নি করেন তিনি। রিপোর্ট অনুযায়ী, ময়নাতদন্তের পর গতকাল গল্লামারী মহাশ্মশানে শেষকৃত্য হয়েছে অর্ণবের। জানা গিয়েছে, অর্ণবকে লক্ষ্য করে পাঁচটি গুলি করা হয়েছিল। এই আবহে সবারই মনে একটা প্রশ্ন, কেন এম নৃশংস ভাবে খুন করা হল অর্ণবকে? এই আবহে পরিবারের তরফ থেকে দ্রুত দোষীদের ধরে সর্বোচ্চ সাজা দেওয়ার দাবি উঠেছে। (আরও পড়ুন: '৩ জনের নাম যাতে সামনে না আসে…', আরজি কর মামলায় বিস্ফোরক সঞ্জয় রায়ের নয়া আইনজীবী)
উল্লেখ্য, ২৪ জানুয়ারি স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ খুলনা শহরের তেঁতুলতলা মোড় এলাকায় খুন করা হয়েছিল অর্ণবকে। অর্ণব খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএ-র ছাত্র ছিলেন। এই বিষয়ে পুলিশ জানিয়েছে, খুনের কারণ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অপরদিকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত দোষীরা এখনও ধরা পড়েনি। তাদের ধরতে নাকি তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। (আরও পড়ুন: পদ্মবিভূষণ পাচ্ছেন 'তিন তালাক' বাতিল করা প্রাক্তন CJI জাস্টিস জগদীশ সিং কেহার)
আরও পড়ুন: 'নীতি পক্ষাঘাত' দূর হতে পারে 'এক দেশ, এক নির্বাচনে', বললেন রাষ্ট্রপতি
জানা গিয়েছে, ২৪ জানুয়ারি রাত সাড়ে ন'টা নাগাদ খুলনা শহরের তেঁতুলতলা মোড়ে একটি চায়ের দোকানে চা খাচ্ছিলেন অর্ণব। দোকানের সামনেই নিজের বাইকে হেলান দিয়ে ছিলেন তিনি। সেই সময় আচমকা কয়েকটি মোটোরসাইকেল সেখানে এসে পৌঁছায়। কিছু বোঝে ওঠার আগেই বাইকে থাকা দুষ্কৃতীরা মলা চালায় অর্ণবের ওপরে। অর্ণবকে লক্ষ্য করে বাইক আরোহী দুষ্কৃতীরা গুলি চালায়। সেই গুলি অর্ণবের মাথা ভেদ করে। সেখানেই লুটিয়ে পড়েন অর্ণব। এদিকে ঘটনা ঘটিয়ে সঙ্গে সঙ্গে সেখান থেকে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। এবং বাইক আরোহীদের কাছে বন্দুক থাকায় তাদের কেউ আটকানোর সাহস করতে পারেনি। তবে দুষ্কৃতীরা পালাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। অর্ণবকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয়রা বেসরকারি সিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই চিকিৎসকরা সেই পড়ুয়াকে মৃত বলে ঘোষণা করে।
উল্লেখ্য, বিগত দিনে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা জুড়ে হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। যদিও ইউনুস সরকার এই হামলাগুলি নিয়ে দাবি করেছে, সেগুলি নাকি ধর্মীয় কারণে ঘটেনি। তবে সরকারি মতে যেই কারণেই এই সব হামলা হয়ে থাকুক না কেন, সেই দেশের প্রশাসন যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে ব্যর্থ, তা বারবার সামনে চলে আসছ।