রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় বাংলাদেশে গ্রেফতার চিন্ময়কৃষ্ণ প্রভুর জামিনের আবেদন এদিন নাকচ হয়ে যায় চট্টগ্রাম মহানগর দায়েরা আদালতে। বুধবার, আদালতে চিন্ময়কৃষ্ণের জামিনের আবেদন এগিয়ে আনার পক্ষে সওয়াল করেন হিন্দু সন্ন্যাসীর আইনজীবী। চট্টোগ্রাম মহানগর দায়েরা আদালতের বিচারক সেই আর্জি খারিজ করে দেন। গোটা ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে বুধবারের মামলার শুনানিতে উপস্থিত হওয়া চিন্ময়কৃষ্ণের পক্ষের আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষের ওকালতনামা। চিন্ময়কৃষ্ণের পক্ষের আইনজীবীর উপযুক্ত ওকালতনামা না থাকায় এই আর্জি খারিজ হয়।
উল্লেখ্য, গত ৩১ অক্টোবর রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ ওঠে চিন্ময়কৃষ্ণ সহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ দায়ের করেন বিএনপি নেতা ফিরোজ খান। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, চিন্ময়কৃষ্ণের জামিনের শুনানি ২০২৫ সালের ২ জানুয়ারি হবে বলে জানানো হয়েছে।
এদিকে, চিন্ময়কৃষ্ণের আগাম জামিনের মামলায় তাঁর পক্ষের আইনজীবী দাবি করেছিলেন যে, চিন্ময়কৃষ্ণকে মিথ্যা ও সাজানো মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি ডায়াবেটিস ও শ্বাসকষ্ট সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। আবেদনে বলা হয়, চিন্ময়পক্ষের আইনজীবী শুভাশিস শর্মা ৩ ডিসেম্বরের শুনানিতে অংশ নিতে পারেননি নিরাপত্তার কারণে। এদিকে সরকার পক্ষের আইনজীবী পিপি হক ভূঁইঞা বলছেন, চিন্ময়ের আগাম জামিনের আবেদন করা আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ কোনও ওকালতনামা দেননি তাঁর পক্ষে লাড়াই করার জন্য।
এদিকে, হাজির ছিলেননা শুভাশিস শর্মা। সেই শুভাশিস শর্মাও রবীন্দ্র ঘোষকে এই মামলা লড়ার জন্য কোনও নথি দেননি। পরে চিন্ময়পক্ষের আইনজীবীর আবেদন খারিজ হয়। রবীন্দ্র ঘোষ নামের ওই আইনজীবী ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম এসেছিলেন চিন্ময়কৃষ্ণ প্রভুর পক্ষে এই আইনি লড়াইয়ের জন্য। এছাড়াও এই মামলায় আরও ২ অভিযুক্তের জামিনের শুনানি হওয়ার কথা ছিল আজ। তবে তা হয়নি, কারণ, ওই দু'জনের আইনজীবী এদিন কোর্টে আসতে পারেননি।
এদিকে, চিন্ময়কৃষ্ণের জামিনের আবেদন খারিজ হতেই উল্লাসে ফেটে পড়েন আদালত চত্বরে জড়ো হওয়া কয়েক শত আইনজীবী। ‘প্রথম আলোর’র রিপোর্ট বলছে, শত শত আইনজীবী সেখানে দাবি করতে থাকেন, ওকালতনামা ছাড়া শুনানি আইনের বিধানে নেই। আদালত জানায়, জামিনের আবেদনের শুনানির অনুমতি দেওয়া হয়নি। বিব্রত বিচারক এজলাস থেকে উঠে চলে যান। পরে দুপুরে তিনি এজলাসে আসেন।
বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও বাংলাদেশ মাইনরিটি ওয়াচের সভাপতি রবীন্দ্র ঘোষ পেশায় আইনজীবী। তিনিই এদিন চিন্ময়কৃষ্ণের হয়ে সওয়াল করতে আসেন চট্টগ্রাম আদালতে। তিনি জানান, নিরাপত্তার কারমে চিন্ময়ের আইনজীবী ৩ ডিসেম্বর শুনানিতে অংশ নিতে পারেননি। এজন্য আগাম জামিনের শুনানির আবেদন করা হয়। কিন্তু আইনজীবীদের বাধার মুখে আদালত তা নাকচ করে। তিনি জানান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসাবে তিনি মক্কেলের ওকালতনামা ছাড়া মামলা লড়তে পারেন। তবে আইনজীবী নাজিম চৌধুরী বলেন, মক্কেলের ওকালতনামা বা যে আইনজীবীকে মক্কেল ওকালতনামা দিয়েছেন, সেই আইনজীবী উপস্থিতি থেকে অন্য যেকোনও আইনজীবীকে শুনানিতে আনতে পারেন।