ভারতের প্রতিবেশী দেশে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে পালাবদল ঘটেছে এই কয়েক মাস আগেই। বাংলাদেশের সেই ঘটনার নেপথ্যে কি আমেরিকার হাত আছে? সস্প্রতি দিল্লি সফর সম্পন্ন করা মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সালিভান দাবি করলেন, ঢাকায় যা ঘটেছে, তার নেপথ্যে ওয়াশিংটনের হাত থাকতে পারে বলে যে ধারণা তৈরি হয়েছে, তা ভিত্তিহীন এবং ভুয়ো। তিনি আরও দাবি করেছেন, ভারতের শীর্ষ পর্যায়ের আধিকারিকরাও বিশ্বাস করেন না যে বাংলাদেশের ঘটনার সঙ্গে আমেরিকার কোনও যোগ আছে। (আরও পড়ুন: সাজায় 'নিঃশর্ত অব্যাহতি' পেয়েও খুশি নন, রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন জানাতে চান ট্রাম্প)
আরও পড়ুন: লুকিয়ে আছে কয়েকশো কোটি টাকার সোনা, সিন্ধু নদে 'গুপ্তধন' খুঁজে পেল পাকিস্তান!
উল্লেখ্য, ডেমোক্র্যাট ক্লিন্টন দম্পতির ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনুস। এদিকে পতনের আগে একাধিকবার শেখ হাসিনাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মুণ্ডপাত করতে শোনা গিয়েছিল। তাঁর দাবি ছিল, ভারতের উত্তরপূর্বের কিছুটা অংশ নিয়ে খ্রিস্টান রাষ্ট্র গড়তে চেয়েছিল আমেরিকা। এরই সঙ্গে বাংলাদেশের সেন্ট মার্টিন্স দ্বীপটিতে ঘাঁটি তৈরি করতে চেয়েছিল আমেরিকা। হাসিনার দাবি ছিল, সেন্ট মার্টিন্স আমেরিকাকে 'দিয়ে দিলে' নাকি তাঁর সরকার টিকে যাবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এক মার্কিন কূটনীতিক। এই সবের মাঝেই হাসিনার পতনের পর থেকেই অনেকের মনে প্রশ্ন জেগেছিল, তাহলে কি আমেরিকার অঙ্গুলিহেলনেই এই অভ্যুত্থান? সেই জল্পনা আরও জোরালো হয় যখন নিউইয়র্কে গিয়ে ক্লিন্টনের ফাউন্ডেশনের অনুষ্ঠানে অংশ নেন মহম্মদ ইউনুস। সেখানে তিনি মাহফুজ আলমের পরিচয় করিয়ে দেন সবার সঙ্গে। ইউনুস তখন দাবি করেছিলেন, মাহফুজই 'গণঅভ্যুত্থানের মাথা'। যদিও এই সবের মাঝে শেখ হাসিনা পুত্র সজীব ওয়াজেদ দাবি করেছিলেন, তাঁরা কখনই বলেনি যে আমেরিকার কারণে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। (আরও পড়ুন: বছরে ১১০০০০ প্রোমোশন হয়েছে, ক্যাম্পাসিংয়ে নিয়োগ হবে আগের থেকে বেশি: TCS)
আরও পড়ুন: ২ বছর ধরে লাগাতার ধর্ষণের শিকার ক্রীড়াবিদ, কোচ সহ ৬০ জন জড়িত বলে অভিযোগ
অবশ্য এর আগে ক্ষমতায় থাকাকালীন বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে হাসিনা আমেরিকার বিরুদ্ধে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ তুলেছিলেন। তখনও তিনি বলেছিলেন, এক শ্বেতাঙ্গ তাঁকে অফার দিয়েছেন যে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে যদি নৌঘাঁটি করতে দেওয়া হয়, তাহলে কেউ তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পাপবে না। এদিকে এর আগে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বিএনপি ঘনিষ্ঠ ছিলেন বলেও অভিযোগ করেছিল হাসিনার সরকার। (আরও পড়ুন: সংসদে মহিলাদের ৩৩% সংরক্ষণের আইনকে চ্যালেঞ্জ, মামলার আবেদন নিয়ে কী বলল SC?)
আরও পড়ুন: গভীর রাতে শাসকদলের বিধায়কের গুলিবিদ্ধ দেহ উদ্ধার, রহস্যজনক মৃত্যুর তদন্তে পুলিশ
এদিকে সম্প্রতি দীর্ঘ সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে বিজেপির তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল যে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট নাকি ভারতকে অস্থিতিশীল করতে চায়। গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ ছিল, 'গত ৪ বছরে কংগ্রেস যে সব ইস্যুতে বিজেপিকে আক্রমণ শানিয়েছে, সেই সব ইস্যুই আন্তর্জাতিক প্রচারের ওপর ভিত্তি করেই করা হয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, পেগাসাস, আদানি থেকে শুরু করে জাতিগত জগণনা, হাঙ্গার ইন্ডেক্স, ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা - এই সব ইস্যুই আন্তর্জাতিক মহল থেকে সমর্থন পেয়েছে কংগ্রেস।' এদিকে বিজেপির আরও দাবি ছিল, আদানি এবং পেগাসাস ইস্যুতে কংগ্রেসের হাতিয়ার হয়েছিল OCCRP-র সব রিপোর্ট। এটি ইউরোপ ভিত্তিক একটি সংবাদসংস্থা। এই সংবাদসংস্থার সঙ্গে মার্কিন যোগ আছে বলে দাবি করা হয়। যদিও জেক সালিভান দাবি করেন, আমেরিকার হয়ে তিনি কোনও 'ডিপ স্টেট' পরিচালনা করেননি। তিনি আরও বলেন, 'ভারতের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে আমার মনে হয়নি যে তারা মনে করেন যে বাংলাদেশে যা ঘটেছে তার পিছনে আমেরিকার কোনও হাত আছে।'