কেমন যেন বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। একে একে মুছে ফেলা হচ্ছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি। এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শেখ মুজিবর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত একাধিক স্মারকের উপর হামলা হয়েছিল। এখন বাংলায় ক্ষমতায় রয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সেই সরকারের প্রধান উপদেষ্টার নাম মহম্মদ ইউনুস। আর তাঁর জমানায় এবার বাংলাদেশ থেকে শেখ মুজিবের সেই জয় বাংলা স্লোগান মুছে ফেলার জন্য চেষ্টা শুরু হয়ে গেল। সূত্রের খবর, সোমবার বাংলাদেশ সরকারের তরফে হাইকোর্টে একটা আর্জি জানানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে যে, জয় বাংলাকে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করে যে রায় দেওয়া হয়েছিল তা বাতিল করা হোক।
২০২০ সালের ১০ মার্চ। জয় বাংলাকে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করে রায় দেওয়া হয়েছিল বাংলাদেশে। আর সেই বাংলাদেশে এবার জয় বাংলাকে মোছার জন্য তৎপরতা তুঙ্গে। সেই সময় ২০২২ সালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ঠিক আগের দিন জয় বাংলাকে জাতীয় স্লোগান হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছিল শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভা। সেদিনই তৎকালীন শেখ হাসিনার সরকার জয় বাংলাকে সরকারিভাবে জাতীয় স্লোগান হিসাবে ঘোষণা করেছিল। সেই সময় এনিয়ে বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছিল। এরপর পদ্মা দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। শেখ হাসিনা যখন দেশে ছিলেন তখনই বঙ্গবন্ধুর একাধিক স্মৃতি বিজড়িত স্থানে হামলা হয়েছিল। আর এখন তো শেখ হাসিনা বাংলাদেশে থেকে চলে গিয়েছেন। এখন সেই বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিকে বাংলাদেশ থেকে মুছতে তৎপর সেদেশের অনেকেরই। আগামী ৮ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে গোটা বিষয়টি শুনানির জন্য নিয়ে আসা হবে।
এখানেই শেষ নয়, কার্যত বাংলাদেশ থেকে শেখ মুজিবের সব নাম নিশান মুছে দিতে তৎপর। আর তারই অঙ্গ হিসাবে এবার ১৫ অগস্টকে জাতীয় শোক দিবস ঘোষণার বিরুদ্ধেও আবেদন করেছে বাংলাদেশ। এদিকে ১৫ অগস্টকে জাতীয় শোক দিবসের ছুটি ঘোষণা করে হাইকোর্টের আগের রায় স্থগিত করে দিয়েছে আপিল বিভাগ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে যেদিন সপরিবারে খুন করা হয়েছিল সেই দিনটিকে জাতীয় শোক দিবস হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল পরবর্তী কালে। কার্যত গোটা জাতির কাছে এই দিনটির একটা মন খারাপের বার্তা বয়ে আনত। তবে নতুন বাংলাদেশ সেই দিনটিকে জাতীয় শোক দিবস হিসাবে আর পালন করতে চায় না। এবার আবেদন গেল আদালতে।