সংখ্যালঘু নির্যাতন ইস্যুতে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের রিপোর্ট উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এমনই দাবি করলেন ইউনুসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তাঁর অভিযোগ ঐক্য পরিষদের রিপোর্ট তৈরির প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে। এই আবহে শফিকুল বলেন, 'এই ধরনের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রিপোর্টের ওপরে ভিত্তি করে অনেকেই বাংলাদেশের চরিত্র নির্ধারণ করছে। সেখানে দেখানো চাচ্ছে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হচ্ছে। এর আগে আরও দুটো প্রতিবেদন (ঐক্য পরিষদ) তারা প্রকাশ করেছিল। সেগুলো নিয়ে পুলিশ প্রতিটা কেস ধরে ধরে তদন্ত করে দেখে দুয়েকটা বাদে বাকিগুলোর ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক কারণ ছিল না। নিয়মিত অপরাধের ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হিসেবে তুলে ধরছে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।' (আরও পড়ুন: পাকিস্তানে সামরিক হাসপাতালে মৃত্যু খলিস্তানি জঙ্গি নেতা মহল সিং বব্বরের)
আরও পড়ুন: মতুয়া গড়ে তৃণমূল সাংসদের পা ছুঁয়ে প্রণাম BJP বিধায়ক অসীমের, কী বললেন মমতাবালা?
শফিকুল বলেন, 'তাদের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের ১১টি ঘটনার তদন্ত করেছে পুলিশ। তবে একটির সঙ্গেও সাম্প্রদায়িক সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। তাদের প্রত্যেকটা প্রতিবেদন স্বচ্ছতার সঙ্গে তদন্ত করা হয়েছে। আমরা দেখছি সংগঠনটির প্রতিবেদন তৈরিতে স্বচ্ছতা নেই। তাদের প্রতিবেদন ধরে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রচার করা হচ্ছে। আশা করব বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে তারা গঠনমূলক হবে। বারবার তাদেরকে বলেছি প্রতিবেদন সংশোধন করার জন্য, কিন্তু তারা সেটা করেননি। তারা যে প্রতিবেদন তৈরি করে সেটা বিশ্বের অনেকেই টুইট করে। দেখা যাচ্ছে, ইউএসএ সিনেটে বা ইউকে কমনসে এই প্রতিবেদনগুলো উদ্ধৃতি করেন অনেকে।' (আরও পড়ুন: দুর্গা মন্দিরে পাঁচিল ভাঙার অভিযোগ, উত্তেজনা ছড়াল মেমারিতে)
আরও পড়ুন: একের পর এক রাস্তা 'ব্লক' বলোচিস্তানে! হামলা গোয়াদার, নোশকি, বোলান সহ বহু স্থানে
এর আগে ভারতের মাটিতে দাঁড়িয়ে ইসলামি সন্ত্রাস এবং বাংলাদেশি সংখ্যালঘুদের জন্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন আমেরিকার তুলসি গ্যাবার্ড। এর জেরে ঘুম উড়েছে বাংলাদেশের। বিগত দিনে বাংলাদেশে ক্রমেই বেড়েছে মৌলবাদ। এই নিয়ে মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান বলেছিলেন, 'হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান এবং অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর দীর্ঘকাল ধরে চলা দুর্ভাগ্যজনক নির্যাতন, হত্যা এবং অত্যাচার নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র খুবই উদ্বিগ্ন। ইসলামপন্থী সন্ত্রাসবাদীদের হুমকি এবং বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠীর বিশ্বব্যাপী কার্যকলাপ একটিই আদর্শ এবং লক্ষ্যের দিকে পরিচালিত। তা হল ইসলামিক খিলাফত।' পরে তুলসির মন্তব্যকে ‘ভিত্তিহীন’ ও ‘বিভ্রান্তিকর’ বলে পালটা তোপ দেগেছিল ঢাকা। (আরও পড়ুন: মতুয়াদের পুণ্যস্নান আজ, তার আগে 'বোধদয়', বারুণী মেলায় মমতাবালর সঙ্গেই শান্তনু)
আরও পড়ুন: 'ভারত-চিন সম্পর্কে ইস্যু থাকবে ভবিষ্যতেও, তবে...', অকপট জয়শংকর
উল্লেখ্য, হাসিনা বাংলাদেশ ত্যাগ করার পর থেকেই বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের অভিযোগ উঠে আসছে। ২০২৪ সালের অগস্ট থেকেই মন্দির থেকে শুরু করে হিন্দুদের বাড়িঘরে ভাঙচুর চলেছে। সেই সময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা থেকে বিএনপি-জামাত দেখেছিল 'আওয়ামি লিগের ষড়যন্ত্র'। তবে কয়েক মাস যাওয়র পরও সেই দেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার থামেনি। ধর্মের নামে চাকরি থেকে জোর করে পদত্যাগ করানো হচ্ছে সংখ্যালঘুদের। অনেককে ধর্মান্তরিত করানোর অভিযোগও উঠেছে। এরই মাঝে চট্টগ্রামে হিন্দু এবং বৌদ্ধদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। সংখ্যালঘু অত্যাচারে সেখানে অভিযুক্ত খোদ সেনা। হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুর গ্রেফতারি ঘিরে আরও উত্তাল হয় পরিস্থিতি। এদিকে সেখানে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে বাংলাদেশের কট্টরপন্থীরা পথে নেমেছিল। 'জুলাই বিল্পবের' ছাত্র নেতারাও ইসকনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। সারজিস আলম চট্টগ্রামে ইসকন এবং হিন্দুদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক ভাষণ দিয়েছেন সম্প্রতি। এই আবহে ভারতের রাস্তাতেও লোক নেমেছিল। বাংলাদেশি মৌলবাদে বিরুদ্ধে স্লোগান ওঠে এখানে। ভারত সরকারও একাধিক বিবৃতি প্রকাশ করে ওপারের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সাম্প্রতিক সময়ে।