তিব্বতে ব্রহ্মপুত্রের উচ্চ অববাহিকায় (ইয়ারলুং সাংপো) বিশ্বের বৃহত্তম বাঁধ নির্মাণ করতে চলেছে চিন। এই নিয়ে সম্প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করে নিজেদের আপত্তির কথা জানিয়েছে দিল্লি। এবার এই নিয়ে ঢাকার তরফ থেকেও উদ্বেগ প্রকাশ করা হল। সম্প্রতি বেজিং সফরে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিদেশ মন্ত্রকের উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। সেই সফর শেষে বাংলাদেশে ফিরে তিনি জানালেন, ইয়ারলুং সাংপো জলিবদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে তথ্য বিনিময় সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে চিন এবং বাংলাদেশের মধ্যে। ওই নদীর ওপরে বাঁধ নির্মাণের বিষয়ে যে বাংলাদেশ উদ্বিগ্ন, তাও নাকি চিনা প্রশাসনকে জানিয়ে এসেছেন তিনি। (আরও পড়ুন: সামরিক কর্তাদের সফরের পর এবার পাকিস্তানের পথে বাংলাদেশি নৌবাহিনীর জাহাজ)
আরও পড়ুন: 'ভারতীয় আগ্রাসন, ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও...', ইস্যু এক, স্লোগান আরেক!
আরও পড়ুন: খুলনায় হিন্দু পড়ুয়াকে খুনের ঘটনায় 'ঘনিষ্ঠ বন্ধু' গ্রেফতার, ক্রমে বাড়ছে রহস্য
এই নিয়ে বাংলাদেশি সাংবাদিকদের তৌহিদ বলেন, 'তাদের বলেছি যে, আপনারা এটা নিয়ে যে গবেষণা ও সমীক্ষা করেছেন, সেই সংক্রান্ত তথ্য আমাদের সঙ্গে ভাগ করে নিন। এদিকে চিনের তরফ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে যে এই বাঁধ তৈরির ফলে জলের প্রবাহ কমে না।' উল্লেখ্য, তিব্বতের যে অংশে বিশ্বের বৃহত্তম বাঁধ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে চিন, তা হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলের সেই অংশের অন্তর্গত, যেখানকার ভৌগোলিক, প্রাকৃতিক এবং বাস্তুতন্ত্রগত অবস্থান অত্যন্ত সংবেদনশীল। এই প্রকল্প খাতে ১৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করতে চলেছে চিন। এই নিয়ে সম্প্রতি চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মাও নিং বলেছিলেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করা হলে সংশ্লিষ্ট নদীর গতিপথের নিম্ন অববাহিকায় অবস্থিত অঞ্চলগুলির কোনও ক্ষতি হবে না। কয়েক দশকের সমীক্ষার পরই তাঁরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন বলেও দাবি করেছেন মাও নিং। (আরও পড়ুন: এতদিন পরও জারি ধরপাকড়, চট্টগ্রামে গ্রেফতার চিন্ময় প্রভুর আরও ১১ 'অনুগামী')
আরও পড়ুন: 'কয়েকটা ড্রোন ছেড়ে দিলেই...', বাংলাদেশকে 'মশা-মাছি' বলে আক্রমণ শুভেন্দুর
আরও পড়ুন: বন্ধ নিজেদের অনুদান, তবুও ট্রাম্পকে 'ধন্যবাদ' জানাল বাংলাদেশ, ইউনুসের সরকার বলল…
এদিকে বাংলাদেশি বিদেশ মন্ত্রকের উপদেষ্টা জানান, এবারের বেজিং সফরে তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। এর আগে ২০২৪ সালে হাসিনা জমানায় তিস্তা প্রকল্পে ভারতের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল চিন। এদিকে দিল্লি সফরে এসে মোদী সরকারের থেকেও এই তিস্ত প্রকল্প নিয়ে প্রস্তাব পেয়েছিলেন শেখ হাসিনা। এরপরই বাংলাদেশ ফিরে হাসিনা বলেছিলেন, দুই দেশের প্রস্তাবই খতিয়ে দেখা হবে। তবে এখন ঢাকার মসনদে শেখ হাসিনা নেই। এই আবহে তিস্তা প্রকল্প নিয়ে বাংলাদেশ কোন পথে হাঁটে, তার দিকে নজর থাকবে কূটনৈতিক মহলের। উল্লেখ্য, ভারতের শিলিগুড়ি করিডরের কাছেই সীমান্ত পারে তিস্তার ওপরে চিন একটি বাঁধ তৈরি করে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল বাংলাদেশকে। ২০২০ সালেই নাকি সেই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল ঢাকাকে। তবে বাংলাদেশ নাকি সেই প্রস্তাবে এখনও সায় দেয়নি। আর তৌহিদ জানিয়ে দেন, সেই নিয়ে এই সফরকালে তাঁর কোনও কথা হয়নি চিনা কর্তাদের সঙ্গে।