তাঁর পরিবার বহু রক্তাক্ত অধ্যায় পার করে এসেছে। তাঁর বাবা বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমান সহ তাঁর পরিবারের ১৮ সদস্যকে খুন করা হয়েছিল। দিনটা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। পাকিস্তানের সেনার হাতে হয়েছিল সেই হত্যাকাণ্ড। সেই সময় দেশের বাইরে ছিলেন শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানা। প্রাণে রক্ষা পান তাঁরা। সেই অভিশপ্ত দিনের পর কেটে গিয়েছে বহু দশক। এরপরও সদ্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক অনুষ্ঠানে বলেছেন,'শুধু আমার জীবনই ঝুঁকিপূর্ণ নয়, যাঁরা আমায় নিরাপত্তা দেন তাঁদের জীবনও ঝুঁকিপূর্ণ।'
রবিবারই চারদিনের চিন সফরে রওনা হয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার আগে বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের ৪৯ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ঢাকার সেনানিবাসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানেই তিনি প্রাণ সংশয় নিয়ে নিজের বক্তব্য রাখেন। ১৯৭৫ সালে শেখ হাসিনার পরিবারের ওপর নৃশংস সেই খুনী হামলার ঘটনার পর দিল্লিতে বেশ কিছু বছর ছিলেন শেখ হাসিনা। পরে ১৯৮১ সালে তিনি দেশে ফেরেন। দেশের রাজনীতিতে তিনি ধীরে ধীরে জমি পোক্ত করেন। তাঁর বাবা শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া আওয়ামি লিগের হাল ধরেন হাসিনা। এরপর হন প্রধানমন্ত্রী। তবে তথ্য বলছে, তাঁকে ২০ ও বেশি বার হত্যার চেষ্টা করা হয়। সেই প্রসঙ্গ উস্কেই হাসিনা এদিন তাঁর জীবনের ঝুঁকির প্রসঙ্গ আনেন।
দেশের প্রতি তাঁর ভাবনাচিন্তার দিকটি তুলে ধরে হাসিনা বলেন, ‘বড় দেশ আমেরিকা, তাদের কোম্বানি এখান থেকে গ্যাস তুলে নিয়ে বিক্রি করবে ভারতে, আমি রাজি হইনি। দেশের সম্পদ বিক্রি করে ক্ষমতায় আসব, এই দুর্বলতা আমার কখনওই ছিল না। খবরদারি করা বড় দেশগুলি এখনও বাংলাদেশের উন্নয়ন আর আগ্রগতির কথা অস্বীকার করতে পারেনা। এই উন্নতির যাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে।’ চিনের সফরের আগে হাসিনা তাঁর বক্তব্যে বলেন,'আমেরিকার চেয়ে এক শতাংশ হলেও দারিদ্র্যের হার কমাতে হবে দেশে।' বাংলাদেশের যে সেনানিবাসে এই অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছে, সেখানে বাংলাদেশের স্বাধীনতার আগের সময়ের ছবি তুলে ধরে হাসিনা বলেন,' জিয়াউর রহমানের সময় সেনা নিবাসের আকাশ বাতাস ভারি হত বিধবাদের কান্নায়। আমি যখন আমার ছেলে মেয়ের জন্য প্রার্থনা করি, তখন আমার সঙ্গে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের জন্যও প্রার্থনা করি।' একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কারওর রক্তচক্ষুকে ভয় করে না বাংলাদেশ। এই দেশকে আর কেউ পিছনে টানতে পারবে না। অপ্রতিরোধ্য অগ্রগতির পানে এগিয়ে যেতে হবে।’