ছাত্র আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। তার জেরে রাস্তা অবরোধ, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, রাবার বুলেট, শতাধিক মৃত্যু, মাঝরাতে কার্ফু জারি, সেনা, সাঁজোয়া গাড়ির দাপাদাপি কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত করেছে গোটা বাংলাদেশকে। তাতে বিপুল পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে সরকারি সম্পত্তির। কারণ আন্দোলনের সময় বাংলাদেশ জুড়ে নানা নাশকতার ঘটনাও ঘটেছে। ছাত্র আন্দোলনকে কাজে লাগিয়ে এক শ্রেণির দুষ্কৃতী একাধিক সরকারি ভবন, পুলিশের গাড়ি এবং অন্য জায়গাগুলিতে অগ্নিসংযোগ করেছে বলে দাবি বাংলাদেশের প্রশাসনের।
এদিকে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে এবার শুরু হয়েছে চিরুনি তল্লাশি। তারপর নাশকতাকারীদের ধরিয়ে দিলে পুরস্কার দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে বাংলাদেশের পুলিশ। পাল্টা আন্দোলনকারীদের নেত্রী নুসরত তাবাস্সুম বিবিসিকে জানান, এত পড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছে। তার বিচার না পাওয়া পর্যন্ত লড়াই চলবে। কোটা বিরোধী তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলেন পড়ুয়ারা। কোটা প্রথার অবসান ঘটিয়ে মেধার ভিত্তিতে চাকরিতে নিয়োগ করার দাবি জানান আন্দোলনকারীরা। রবিবার বাংলাদেশের আদালত জানিয়েছে, চাকরিতে মেধার ভিত্তিতে ৯৩ শতাংশ আসনে নিয়োগ করা হবে। কিন্তু তার পরও থামছে না আন্দোলন।
আরও পড়ুন: আইসক্রিম গোডাউনের ডিপ ফ্রিজে উদ্ধার মৃতদেহ, হাড়হিম ঘটনায় আলোড়ন মালদায়
অন্যদিকে দেশজুড়ে কার্ফু এখনও জারি রয়েছে। সোমবার সরকারি ছুটির কথা আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই নির্দেশ প্রত্যাহার করা হয়নি। সুতরাং মঙ্গলবারের আগে নতুন কোটা ব্যবস্থা নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি সম্ভব নয়। এদিন শুনশান ছিল রাজধানী ঢাকার রাস্তাঘাট। পথে গাড়ির সংখ্যাও ছিল হাতে গোনা। বাংলাদেশের ‘প্রথম আলো’ পত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী, রবিবার পর্যন্ত সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে ১৭৪ জনের। সংঘর্ষ, হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন রশিদ জানান, কোটা বিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, হামলা, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে মামলা দায়ের করা হচ্ছে।
এছাড়া গত ৫ জুন মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের জন্য সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ কোটা ব্যবস্থা পুর্নবহালের নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ হাইকোর্ট। তার বিরুদ্ধে পথে নেমে বিক্ষোভ দেখান ছাত্র–যুবরা। পরে সেই আন্দোলন হিংসাত্মক আকার নেয় বলে অভিযোগ। মেট্রো রেল, নানা সরকারি অফিস–ভবন, এক্সপ্রেসওয়ে ভাঙচুর করা এবং আগুন লাগানো ও পুলিশকে হত্যা করার ঘটনায় মামলা করা হচ্ছে। আর বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লা আল মামুন জানান, এখানে নাশকতার সঙ্গে জড়িতদের ধরিয়ে দিলে পুরস্কার দেওয়া হবে।