বাংলাদেশের কুখ্যাত সমাজবিরোধী (বাংলাদেশি মিডিয়া ও প্রশাসনের ভাষায় - 'সন্ত্রাসী') সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদকে পুলিশ গ্রেফতার করতেই 'তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠলেন' তাঁর স্ত্রী তামান্না শরমিন। তাঁর যে অনেক টাকা, আর সেই টাকার জোরে তিনি যে তাঁর 'খুনি, তোলাবাজ' স্বামীকেও অনায়াসে পুলিশের জাল কেটে বের করে আনতে পারেন, সেকথা খোলাখুলিই জানিয়েছেন শরমিন। রীতিমতো হুমকি, হুঁশিয়ারি দিয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে থাকা সমস্ত পক্ষকে।
কে এই সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ?
বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমে বেশ চর্চিত নাম হল - এই সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ। পুলিশের দাবি, তিনি নাকি যথেষ্ট কীর্তিমান! তাঁর বিরুদ্ধে খুন, তোলাবাজি ও বেআইনি অস্ত্র ব্যবহারের অন্তত ১৭টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র চট্টগ্রামেই অন্তত ১০টি মামলা ঝুলে রয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। এহেন সাজ্জাদ এত দিন পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁর স্ত্রীই সেকথা জানিয়েছেন।
কীভাবে ধরা পড়লেন সাজ্জাদ?
বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম বলছে, গত বছরের ১৭ জুলাই চান্দগাঁও থানার পুলিশ সাজ্জাতকে গ্রেফতার করেছিল। সেই সময় অস্ত্র-সহ পাকড়াও করা হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু, পরের মাসেই তিনি জামিন পেয়ে যান। এরপর গত বছরেরই ৪ ডিসেম্বর নগরের অক্সিজেন এলাকায় পুলিশ সাজ্জাতকে ধরতে যায়। কিন্তু, একেবারে ফিল্মি কায়দায় পুলিশকে লক্ষ করে গুলি ছুড়তে ছুড়তে সাজ্জাত হাওয়া হয়ে যান বলে দাবি পুলিশের। সেই ঘটনায় পুলিশকর্মী-সহ মোট পাঁচজন জখম হন।
তথ্য বলছে, কুখ্য়াত এই সমাজবিরোধীকে নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই নাস্তানাবুদ হতে হচ্ছিল পুলিশকে। তাই তারা সাজ্জাতের নামে পুরস্কার পর্যন্ত ঘোষণা করে। সেই পুরস্কার ঘোষণা করেছিলেন চট্টগ্রাম নগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ। তার ঠিক আগের দিন ফেসবুক লাইভে এসে বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি আরিফুর রহমানকে হুমকি দেন সাজ্জাদ হোসেন।
এহেন সাজ্জাদই নাকি ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন ঢাকার একটি শপিং মলে। সেই সময়েই প্রথমে তেজগাঁও থানার পুলিশ তাঁকে আটক করে এবং পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনা ঘটে শুক্রবার (১৫ মার্চ, ২০২৫) রাতে। আর তারপরই সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে তামান্না শরমিনের সংশ্লিষ্ট ভিডিয়ো।
তামান্না শরমিনের হুঁশিয়ারি!
স্বামী গ্রেফতার হতেই ফেসবুকে ফুঁসে উঠেছেন তামান্না। ভাইরাল ভিডিয়োয় তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, 'আমরা কাঁড়ি কাঁড়ি, বান্ডিল বান্ডিল টাকা ছেড়ে আমার জামাইকে (বাংলাদেশের ভাষা অনুসারে এক্ষেত্রে জামাই অর্থাৎ স্বামী) নিয়ে আসব। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।'
তামান্না শরমিনের দাবি, তাঁর যা টাকা রয়েছে, তা খরচ করে স্বামীকে হাজতের বাইরে বের করতে ১০-১২ দিনের বেশি সময় তাঁর লাগবে না। তার মধ্যেই সাজ্জাদ নাকি জামিন পেয়ে যাবেন!
তাঁর কথায়, 'আমার জামাই গতকাল (শনিবার) রাতে গ্রেফতার হয়েছে, এতে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। মামলা যখন আছে, গ্রেফতার হবেই। আপনারা যাঁরা ভাবতেছেন, আর কোনও দিন বের হবে না, তাঁদের জন্য এক বালতি সমবেদনা।’ প্রতিপক্ষকে হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, ‘এত দিন আমরা পলাতক ছিলাম, এখন তোমাদের পলাতক থাকার পালা শুরু। খেলা শুরু হবে এখন।'