রাষ্ট্রসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলনের জেরে মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত করবে। বাংলাদেশে আসারও কথা আছে। তার আগে বাংলাদেশের হিংসা নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ রিপোর্ট প্রকাশ করল রাষ্ট্রসংঘ। তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের নিরাপত্তাবাহিনী আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের উপর অপ্রয়োজনীয় শক্তি প্রয়োগ করেছে। তেমনটাই দৃঢ় ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে। তার ফলে পরবর্তীতে মানুষ হিংসাত্মক হয়ে ওঠে এবং গণ-আন্দোলনের রূপ নেয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে হিন্দুদের নিরাপত্তার দাবিতে কলকাতার রাজপথে মিছিল হিন্দু জাগরণ মঞ্চের
প্রসঙ্গত, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় গত ৫ অগস্ট হেলিকপ্টারে করে প্রতিবেশী ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। সেইসঙ্গেই তাঁর ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। রাষ্ট্রসংঘ জানিয়েছে, ৫ অগস্ট শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার আগে কয়েক সপ্তাহের বিক্ষোভে ৪৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল।
রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় বাংলাদেশে হিংসার বিষয়ে একটি প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে রাষ্ট্রসংঘ বলেছে, নিরাপত্তা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অপ্রয়োজনীয় এবং অসামঞ্জস্যপূর্ণ শক্তি ব্যবহার করেছে। তাতে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। এই লঙ্ঘনের মধ্যে রয়েছে বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্বিচারে গ্রেফতার ও আটক, জোরপূর্বক অপহরণ, নির্যাতন ও দুর্ব্যবহার এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশে কঠোর বিধিনিষেধ।
এ নিয়ে তদন্তের প্রয়োজন বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রসংঘ।এছড়াও, প্রতিবেদনে দ্রুত আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। আরও প্রাণহানি, হিংসা এবং প্রতিশোধ প্রতিরোধের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার তদন্তের জন্য জাতিসংঘকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক বলেছেন, বাংলাদেশে আন্দোলন হল অধিকার ও আইনের শাসনের ভিত্তিতে শাসনব্যবস্থা নিশ্চিত করার একটি সুযোগ। মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য জবাবদিহি এবং ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ন্যায়বিচার করার পরামর্শ দিয়েছে রাষ্ট্রসংঘ। এছাড়াও বাংলাদেশের সার্বিক শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে বেশ কিছু পরামর্শও দিয়েছে মানবাধিকার বিষয়ক দফতর।