বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের জেরে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত। রবিবার সংস্কার নিয়ে রায় ঘোষণা করেছে সুপ্রিম কোর্ট। তারপরেও ছাত্রদের আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে বাংলাদেশে। সরকারি গেজেট প্রকাশ সহ একাধিক দাবিতে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। সোমবারও কারফিউ জারি রয়েছে রাজধানীতে। তবে এদিন নতুন করে কোনও হিংসার ঘটনা ঘটেনি। তবে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দাবি পূরণ করতে হবে বলে সরকারের কাছে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা।
আরও পড়ুন: রক্তে ভাসছে বাংলাদেশ, কোটা-বিরোধী আন্দোলনে মৃত্যু অন্তত
সোমবারও বাংলাদেশের অফিস, আদালত বন্ধ ছিল। বেসরকারি- সরকারি অফিস, শিল্প কারখানা, ব্যাঙ্ক সহ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এ দিন বন্ধ ছিল। এছাড়াও ট্রেন চলাচল এদিনও বন্ধ থাকে। তবে শুধুমাত্র বিমান চলাচল করছে। পড়ুয়াদের আন্দোলন হিংসাত্মক রূপ নেওয়ার পরেই বৃহস্পতিবার থেকে বাংলাদেশ পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে ইন্টারনেট।
এর আগে ২০১৮ সালে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিলেন পড়ুয়ারা। উল্লেখ্য, বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ সংরক্ষণ ছিল। যার মধ্যে ছিল মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, মহিলা, অনুন্নত এলাকার মানুষদের জন্য চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা ছিল। সেই সময় আন্দোলনের চাপে পড়ে সরকার কোটা তুলে দেওয়ার কথা ঘোষণা করে। কিন্তু, মামলা গড়ায় আদালতে। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের কয়েকজন সদস্য আদালতের দ্বারস্থ হন। গত মাসে উচ্চ আদালত সেই কোটা বহাল রাখার পক্ষে রায় ঘোষণা করে। তারপরেই শুরু হয় আন্দোলন। মঙ্গলবার সেই আন্দোলনে হিংসার ঘটনা ঘটে। ছাত্র ও নিরাপত্তারক্ষীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। তাতে এখনও পর্যন্ত ১৪৭ জন নিহত হয়েছেন।
এরপর রবিবার সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের রায় বাতিল করে দেয়। সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, সরকারি চাকরিতে মেধার ভিত্তিতে ৯৩ শতাংশ নিয়োগ হবে। আর বাকি ৭ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্য, পিছিয়ে পড়া মানুষ, মহিলা ও অন্যান্যদের জন্য সংরক্ষণ থাকবে। গত মঙ্গলবার থেকে শুরু হয় হিংসা। শুক্রবার থেকে কারফিউ জারি করা হয়। তবে সুপ্রিম কোর্ট পড়ুয়াদের আন্দোলনের পক্ষে রায় দিলেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্র জানান, যতক্ষণ না পর্যন্ত সরকারি গেজেট প্রকাশিত হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন তারা চালিয়ে যাবেন। এছাড়াও যাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে তাদের মুক্তি দিতে হবে। কারফিউ প্রত্যাহার করে নিতে হবে। যে সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে সেগুলি চালু করতে হবে। এরজন্য পড়ুয়ারা সরকারকে ৪৮ ঘণ্টা সময় দিয়েছে।
রবিবার হিংসার ঘটনা ঘটলেও সোমবার কোনও রকমের হিংসার খবর পাওয়া যায়নি। এদিনও সেনাবাহিনীর ট্যাঙ্কগুলিকে রাজধানীর রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছে। এছাড়া সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষীরা টহল দিয়ে বেড়াচ্ছেন।