এবার বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত প্রণয় কুমার ভার্মাকে সমন দিয়ে ডেকে পাঠাল সেদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। মঙ্গলবার প্রণয়কে ঢাকার বিদেশ মন্ত্রকের কার্যালয়ে ডেকে পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, একদিন আগেই ত্রিপুরার আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের নিরাপত্তা বেষ্টনী লঙ্ঘন করে হামলার ঘটনা ঘটে। আগেই সেই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে, ভারতের তরফেও আইনানুগ পদক্ষেপ করা হয়েছে। তার মধ্যেই ভারতীয় রাষ্ট্রদূত প্রণয় কুমার ভার্মাকে ডেকে পাঠানো হল।
উল্লেখ্য, এদিনই বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আইন বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, আগরতলায় যে ঘটনা ঘটেছে, তা আদতে ভারত সরকারের 'ব্যর্থতা'।
বিষয়টি নিয়ে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্ট করেন বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারে আইন বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। কার্যত হুঁশিয়ারির সুরে তিনি লেখেন, 'ভারতকে অবশ্যই বুঝতে হবে, এটা শেখ হাসিনার বাংলাদেশ নয়।'
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, আগরতলার ওই হামলার ঘটনার জেরেই মঙ্গলবার প্রণয় কুমার ভার্মাকে জরুরি তলব করা হয়। তাঁকে সমন পাঠান বাংলাদেশের কার্যনির্বাহী বিদেশ সচিব এম রিয়াজ হামিদুল্লা। তাঁর নির্দেশ অনুসারে, এদিন বিকেল ৪টের আগেই (স্থানীয় সময় অনুসারে) বিদেশ মন্ত্রকের দফতরে পৌঁছে যান প্রণয়।
সেখানেই হামিদুল্লার সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ বৈঠক করেন তিনি। তারপর বিদেশ মন্ত্রকের দফতর থেকে বেরোনোর পর স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন ভারতের এই রাষ্ট্রদূত।
বিভিন্ন বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমে এই সংক্রান্ত যেসমস্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে, সেই অনুসারে, প্রণয় বলেন, ভারত সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে স্থায়ী, স্থিতিশীল এবং গঠনমূলক সম্পর্ক বহাল রাখতে চায়। শান্তি, সুরক্ষা ও উন্নয়ন ইস্যুতে নয়া দিল্লি ঢাকার সঙ্গে একযোগে কাজ করতে চায়।
বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমে আরও দাবি করা হয়েছে, এদিন ভারত ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে 'বহুমুখী এবং সুবিস্তৃত' বলে উল্লেখ করেছেন প্রণয় কুমার ভার্মা। তাই তাঁর মতে, শুধুমাত্র একটি কোনও ইস্যুকে ধরে কথা বললে চলবে না।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ইস্কনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার এবং হিন্দু-সহ বিভিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর লাগাতার অত্যাচারের প্রতিবাদে সোমবার আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের বাইরে প্রতিবাদে সামিল হয় কয়েক হাজার মানুষ।
সেই বিক্ষোভ চলাকালীনই বাংলাদেশে সহকারী হাইকমিশনে নিরাপত্তা বেষ্টনী লঙ্ঘন করে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে। ভারত সরকারের তরফে সেই ঘটনার নিন্দা করা হয়। তারপরও বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়ে এ নিয়ে বৈঠক করলেন অন্তর্বর্তী সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের সচিব।