বাংলা নিউজ > ঘরে বাইরে > ইদ কাটতেই রাশ শিথিলতায়, ৫ অগস্ট পর্যন্ত সম্পূর্ণ লকডাউন বাংলাদেশে

ইদ কাটতেই রাশ শিথিলতায়, ৫ অগস্ট পর্যন্ত সম্পূর্ণ লকডাউন বাংলাদেশে

ইদ কাটতেই রাশ শিথিলতায়, ৫ অগস্ট পর্যন্ত সম্পূর্ণ লকডাউন বাংলাদেশে। (ছবিটি প্রতীকী, সৌজন্য রয়টার্স)

কখনও শিথিলতা, কখনও কঠোরতা, এভাবে লকডাউন করে কী কোনও লাভ হচ্ছে? প্রশ্ন আমজনতার।

ইদ করতে যাঁরা গ্রামে গিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে গত দু'দিন ধরে একটি খবর চাউর হয়েছে, লকডাউনের ‘শিথিলতা’ কয়েকদিন বাড়ছে। অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ঢাকায় না ফিরলেও দু'একদিন পরও ফেরা যাবে।

কিন্তু জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বৃহস্পতিবার ডয়চে ভেলেকে নিশ্চিত করেছেন, ‘শিথিলতা আর বাড়ছে না। শুক্রবার ভোর ৬টা থেকেই কঠোর লকডাউন শুরু হচ্ছে।’ তাঁর মতে, ‘এবার শুধু কঠোর নয়, কঠোরতম লকডাউন হবে। কোন ধরনের প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে না, এমনকি রফতানিমুখী শিল্প আর কলকারখানাও এই লকডাউনে বন্ধ থাকবে। মানুষের চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে।’

সরকারি কঠোর বিধিনিষেধের কথা মাথায় রেখেই বৃহস্পতিবার ঢাকায় ফিরছেন মানুষ। মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ফেরিঘাটে বৃহস্পতিবার ছিল ঢাকামুখী মানুষের স্রোত। আবার রাজধানী ছেড়ে গ্রামেও ফিরছেন অনেকে। একই চিত্র মানিকগঞ্জ-রাজবাড়ির দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া ফেরিঘাটেও। শিমুলিয়া ঘাটে দায়িত্ব পালন করা বিআইডব্লিউটিসি এর সহ-মহাব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম বললেন, প্রায় সব লঞ্চ ও ফেরি চালু রয়েছে। তারপরও যাত্রীদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌপথের জন্য বরাদ্দ ১৯টির মধ্যে ১৪টি ফেরি সচল রয়েছে। আর ৮৭টি লঞ্চের মধ্যে চলাচল করছে ৮৬টি। মহামারীতে ৫০ শতাংশ যাত্রী পরিবহনের বিধান থাকলে ঠাসাঠাসি করে যাত্রী নেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া পদ্মা উত্তাল হওয়ায় ফেরিগুলো কুলিয়ে উঠতে পারছে না।

সকাল ৯টার গাড়ি ১০টায় ঢাকার উদ্দেশে ছেড়েছে সাতক্ষীরা থেকে। সাতক্ষীরা এক্সপ্রেসের যাত্রী মীরপুর সিরামিক ও খাদিম সিরামিকসের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার আবু তোরাফ নয়ন বিকেল চারটার দিকে ডয়চে ভেলেকে বলেন, সাতক্ষীরা থেকে যশোর পৌঁছাতেই আড়াই ঘণ্টা লেগেছে। রাস্তায় প্রচুর গাড়ির চাপ। তার মধ্য দিয়েই দৌলতদিয়া ঘাটে পৌঁছেছেন আরও ঘন্টাখানেক আগে। গুগল ম্যাপে তিনি দেখেছেন ঘাট থেকে সাড়ে চার কিলোমিটার দূরে আছেন। গত এক ঘণ্টায় আধা কিলোমিটারের মতো গাড়ি এগিয়েছে। শেষ পর্যন্ত কখন ঢাকায় পৌঁছতে পারবেন, তা অজানা।

এদিকে গাবতলীতে বাড়িমুখী মানুষের চাপও বেড়েছে। ঈগল পরিবহনের কাউন্টারে দায়িত্বে থাকা রফিকুল ইসলাম জানালেন, ‘বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মানুষের চাপ রয়েছে। বহু শ্রমজীবী মানুষ ঈদের সময় কাজ করেছেন, এখন বাড়িতে ফিরছেন। প্রতি ঘন্টায় আমাদের গাড়ি রয়েছে। তারপরও মানুষকে সিট দিতে পারছি না।' কুষ্টিয়া যাওয়ার জন্য কাউন্টারে অপেক্ষা করা একটি পোশাকের দোকানের বিক্রয়কর্মী মহিদ উদ্দিন বললেন, 'কাল থেকে তো সব ১৪ দিনের জন্য বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ঢাকায় থেকে কী করব? তাই গ্রামের বাড়ি চলে যাচ্ছি। লকডাউন শেষ হলে আবার ফিরে আসব। মালিক এই কয়দিন বিনা বেতনে ছুটি দিয়েছেন। বলেছেন, আবার সব স্বাভাবিক হলে যখন দোকান খুলবে তখন আসতে।’

এত দুর্ভোগ ঠেলে যে মানুষ ঢাকায় ফিরছেন, শিথিলতা দু'একদিন বাড়ানোর কোনও চিন্তা সরকারের ছিল কিনা? জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, "কোরবানির ইদের জন্য নয় দিন লকডাউন শিথিলের পর শুক্রবার থেকে পুনরায় বিধি-নিষেধগুলি আরোপ হবে, এই সিদ্ধান্ত তো আগেই দেওয়া হয়েছিল। যাঁরা বাড়ি গিয়েছেন, তাঁরা নিশ্চিত হয়েই গিয়েছেন। যাঁরা বাড়ি গিয়েছেন, তাঁদের এখন ফেরার প্রয়োজন কী? সবকিছুই তো বন্ধ থাকবে। ফলে তাঁরা তো ৫ অগস্টের পর আসলেই পারেন। এই দুই সপ্তাহ কঠোরতম অবস্থানে আমরা থাকব। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এর বিকল্প নেই।' শুক্রবার ভোর থেকেই পুলিশ ও র‌্যাবের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও বিজিবির সদস্যরা মাঠে নামবেন বলেও জানান তিনি।

গত জুন মাসে যেখানে ১ লাখ ১২ হাজার ৭১৮ জন মানুষের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছিল, সেখানে জুলাইয়ের ২০ দিনেই দুই লাখ ছাড়িয়ে গেছে। জুনে মারা গিয়েছেন এক হাজার ৮৮৪ জন। সেখানে জুলাইয়ের ২০ দিনেই সাড়ে তিন হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

কখনও শিথিলতা, কখনও কঠোরতা, এভাবে লকডাউন করে কী কোনও লাভ হচ্ছে? জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু শেষ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য তথা ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘এতে কোনও লাভ হচ্ছে না। এবারও যে কঠোর লকডাউন দেওয়া হবে, তাতে সংক্রমণ কমবে না। আক্রান্তদের আইসোলেশনে পাঠাতে না পারলে সংক্রমণ বাড়তেই থাকবে। এখন যাঁরা গ্রামে গিয়ে সংক্রমণ ছড়িয়ে এলেন বা সংক্রমিত হয়ে এলেন, তাঁকে আপনি কঠোর লকডাউনে যেখানে থাকতে বললেন সেখানে তিনি সংক্রমণ ছড়াবেন। ধানমন্ডির লোক হয়ত গুলশানে গিয়ে সংক্রমণ ছড়াচ্ছেন না। কিন্তু ধানমন্ডিতে তো ছড়াচ্ছেন। ফলে টেস্ট বাড়িয়ে আক্রান্ত মানুষদের আগে চিহ্নিত করতে হবে। এরপর তাদের কোয়ারান্টাইনে পাঠাতে হবে। এতে কষ্ট হবে, কিন্তু ফলও পাওয়া যাবে।’

ঘরে বাইরে খবর

Latest News

প্রযোজকরা বলেছিলেন ভারতীয় দর্শক টিভিতে গর্ভবতী মহিলাদের দেখতে অপছন্দ করেন: মিনি নতুন দুলহানিয়া হচ্ছেন জাহ্নবী, ‘সানি কতটা সংস্কারি’ এবার সেই আপডেট দিলেন বরুণ সিএএ ইস্যু ব্যুমেরাং হতে পারে, চাপে পড়ে ইস্যু বদল করল বিজেপি, প্রচারে এল কী? বাংলায় এখনও ঝুলে জোট, বিহারে RJD-র সঙ্গে হাত মিলিয়ে লড়ছে বাম-কংগ্রেস, কত আসনে? নির্মাণ সংস্থায় বেআইনি লেনদেন, আয়কর স্ক্যানারে ৫০০ তৃণমূল নেতা কড়া শাসন-সুরক্ষার মধ্যে বড় করেছেন অভিষেক-শ্বেতাকে, গোপন কথা ফাঁস করলেন জয়া হুগলিতে প্রচারে তৃণমূলের রচনা, ব্যস্ততার ফাঁকেই শুনলেন, BJP-তো প্রাক্তন স্বামী ভোটের মুখে মাথায় বাজ রাহুলদের, কংগ্রেসের হাতে ১৭০০ কোটির নোটিশ ধরাল আয়কর দফতর রুবি থেকে প্রথমবার মেট্রো ছুটল বেলেঘাটায়! কবে উদ্বোধন? জুড়ে হাওড়ার সঙ্গে টফির লোভ দেখিয়ে ৩ বছরের শিশুকে ধর্ষণ, দিল্লিতে গ্রেফতার বিবাহিত যুবক

Copyright © 2024 HT Digital Streams Limited. All RightsReserved.