শেখ হাসিনা দেশ ছেড়েছেন। সেনাবাহিনীর হাতে এখন বাংলাদেশ। কিন্তু এখনও সেটা অশান্ত। ক্ষোভের আগুন জ্বলছে। এক অদভূত তাণ্ডবলীলায় মেতে উঠেছে ছাত্রসমাজ থেকে শুরু করে নাগরিকরা। চরম ডামাডোল চলছে পদ্মপাড়ে। তার মধ্যে দেশের নানা প্রান্তে ভেঙেছে জেলের তালা। চম্পট দিয়েছে বিপুল পরিমাণ বন্দি থেকে জঙ্গি। আর থানায় আছড়ে পড়েছে জনতার তুমুল ক্ষোভ। এই পরিস্থিতিতে কর্মবিরতির পথে হাঁটতে দেখা যায় সে দেশের পুলিশকে। কর্মবিরতির ডাক দেয় বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের অসহায়তার কথা তুলে ধরেন পুলিশ কর্মীরা। তার মধ্যে ভাইরাল হয়েছে এক পুলিশ কর্মীর ভিডিয়ো। চোখের জলে ভেসে যাচ্ছে মাটি।
তবে এই পরিস্থিতিতে রদবদল হয়েছে পুলিশে এবং সেনাবাহিনীতে। তারপরও উত্তেজনা চরমে রয়েছে। এই আবহে ভিডিয়ো বার্তায় এক পুলিশকর্মী তাঁর উপরমহলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। ভিডিয়োয় তিনি বলেন, ‘আমাদের তো আদেশ মেনে চলতে হয়। ছাত্ররা একদিকে মারা গিয়েছে। অপরদিকে পুলিশও মারা গিয়েছে। আর যে সমস্ত পুলিশ মারা গিয়েছেন তাঁরা নীচুতলার সব কর্মী। যাঁরা অর্ডার দিচ্ছেন তাঁরা কিন্তু কেউ মারা যাননি। আজ পুলিশই বাংলাদেশের মানুষের কাছে জাতীয় ভিলেন। কিন্তু এই পুলিশ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রথম রাজাকারদের বিরুদ্ধে কাউন্টার অ্যাটাক করেছিল। সেই গৌরবময় ইতিহাস আজ খসে পড়ছে। পুলিশকে আজ জাতীয় ভিলেন করে দিয়েছে কিছু স্বার্থপর মহল।’
আরও পড়ুন: তিনদিন ধরে পানীয় জলের পরিষেবা বন্ধ, প্রাণ ওষ্ঠাগত অবস্থা, প্রতিবাদে চলল বিক্ষোভ বর্ধমানে
এই ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে নিজের দুঃখের কথা বলতে গিয়ে গলাটা কেঁপে যাচ্ছে ওই পুলিশকর্মীর। ওই পুলিশকর্মী কাঁদতে কাঁদতেই বললেন, ‘অনেক বড় বড় পুলিশ কর্তারা বড় বড় পদে বসে তাঁদের স্বার্থরক্ষা করছে। আমি এখন পুলিশ হলেও আগে আমিও ছাত্র ছিলাম। আমি এখন একজন সন্তানের বাবা। একজন বাবা হয়ে আমি এটা মেনে নিতে পারি না। আমার ভাইরা মারা গিয়েছে। পরিবারে শুধুই হাহাকার। এগুলি কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’ পুলিশের উপর চাপ বাড়ছে। বিক্ষোভকারীরা সরাসরি হামলা নামিয়ে এনেছে পুলিশের উপর। তাতে বহু পুলিশকর্মী মারা গিয়েছেন। থানাগুলিতে কাঁপছে পুলিশ।
আইনশৃঙ্খলা এখন লাটে উঠেছে বাংলাদেশে। শেখ হাসিনার ভবন লুঠপাট থেকে শুরু করে বঙ্গবন্ধুর মূর্তিতে হাতুড়ি মেরে ভেঙে ফেলে উল্লাস করছে বিক্ষোভকারীরা। গোটা দেশেই লুঠপাট, হামলা, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, খুন, জখম চলছে। আর তা ঠেকানোর মতো কেউ নেই। আক্রান্ত স্বয়ং পুলিশও। আগামীকাল মহম্মদ ইউনুসকে সামনে রেখেই বাংলাদেশে তৈরি হতে চলেছে অন্তবর্তী সরকার। ইউনুসই হবেন সেই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান। আজই সেই কথা ঘোষণা করেছেন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান ওয়াকার উজ জামান। কিন্তু তারপরও বাংলাদেশে শান্তি ফিরছে না। ভারতের সীমান্তে বাড়ছে বাংলাদেশ ছাড়ার ভিড়।