বাংলাদেশ থেকে শেখ হাসিনা সরকারের বিদায়ের পর থেকেই সেদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর অত্যাচার বেড়েছে। এমনকী সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশি সেনার বিরুদ্ধেও অভিযোগ করা হয়েছে, চট্টগ্রামে হিন্দু এবং বৌদ্ধদের ওপর অত্যাচার চালিয়েছে তারা। এই আবহে পড়শি দেশে সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। আর তা নিয়েই প্রশ্ন করা হয় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে। বিবিসি হিন্দির সেই সাক্ষাৎকারে অবশ্য নাহিদের বক্তব্য, 'বাংলাদেশি হিন্দুদের নিয়ে ভারতের কিছু বলার দরকার নেই'। (আরও পড়ুন: 'সাময়িক বঞ্চনার' অবসান, একলাফে ১২% ডিএ বাড়িয়ে কর্মীদের 'বড় উপহার' সরকারের)
আরও পড়ুন: ১০০টি রুট 'হাওয়া', দৈনিক বাসের সংখ্যা ২৫০০ থেকে কমে ৭০০! গলার কাঁটা আরও ১৫০০
এমনকী নাহিদের আরও অভিযোগ, ভারতের সংবাদমাধ্যমে বাংলাদেশ নিয়ে কুৎসা রটানো হচ্ছে। তাঁর কথায়, 'বাংলাদেশ বর্তমানে যে চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড়িয়ে তা নিয়ে ভারত আমাদের সাহায্য করতে পারে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলিতে আমাদের সরকারকে নিয়ে ভুল সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে। এই নিয়ে ভারত সরকারের একটা সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া উচিত। আমরা চাই, আলোচনা হোক তথ্যের ভিত্তিতে।' (আরও পড়ুন: বাংলায় নয়া রেলপথের 'কাঁটা' এক দিঘি, অনড় ৯১, ৯৫০ মিটারের জন্যে নাছোড়বান্দা রেলও)
বাংলাদেশি হিন্দুদের নিয়ে নাহিদ বলেন, 'এখানকার সংখ্যালঘুরা আমাদের নাগরিক। তাদের নিরাপত্তা দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। এ বিষয়ে ভারতের কিছু বলার দরকার নেই।' উলটে তিনি জুলাই-অগস্টের সংঘর্ষের বিষয়ে দিল্লির অবস্থান স্পষ্ট করার দাবি জানান। এদিকে হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের ঘটনায় নাহিদের পালটা যুক্তি, 'সময়মতো ব্যবস্থা না নেওয়া হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতো। বলা হচ্ছিল দুর্গাপুজোয় আরও সহিংসতা হবে। তবে আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পর্যাপ্তসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করে শান্তিপূর্ণভাবে পুজো পরিচালনা করেছি।' পাশাপাশি তাঁর আরও বক্তব্য, 'এর আগের কোনও সরকার সংখ্যালঘুদের সঙ্গে এত ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেনি। আগের সরকারগুলি শুধুমাত্র রাজনৈতিক ফায়দা তুলেছে তাদের থেকে।'
এদিকে বাংলাদেশে ক্রমাগত বেড়ে চলা কট্টরপন্থা প্রসঙ্গে নাহিদের বক্তব্য, 'বাংলাদেশের মানুষ কখনও কোনও সহিংসতা বা উগ্রবাদী সংগঠনকে সমর্থন করে না। বাংলাদেশের মানুষ গণতান্ত্রিক সরকার চায়। এই কট্টরন্থীদের মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার ন্যারেটিভ আদতে আওয়ামি লিগের প্রচার। ভারতও এই ন্যারেটিভকেই সমর্থন করে।' এদিকে ভারত প্রসঙ্গে তাঁর আরও বক্তব্য, 'আমরা কোনো দেশের সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করিনি। কোনো প্রকল্পও বন্ধ করিনি। সবকিছু আগের মতোই চলছে। আমরা দুই দেশ একে অপরকে সঙ্গ দিলে উভয়ের কল্যাণের জন্যে কাজ করতে পারি।' যদিও এরই মাঝে আবার নাহিদ জানান, বাংলাদেশে ভারত সহ বিদেশি বিনিয়োগের প্রকল্পগুলির পর্যালোচনা চলছে। সেই প্রকল্পের সঙ্গে দুর্নীতির যোগ আছে কি না, তা জানতেই নাকি সেই সমীক্ষা চলছে।