চট্টগ্রাম নিম্ন আদালতে আজ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিনের শুনানি হওয়ার কথা। তবে সেই শুনানি আদৌ হবে কি না, তা নিয়ে চরমে জল্পনা। স্থানীয় কোনও হিন্দু আইনজীবী এর আগে চিন্ময় প্রভুর হয়ে মামলা লড়তে সাহস দেখাননি ২৬ নভেম্বরের পর থেকে। অপরদিকে এর আগে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে গিয়ে চিন্ময় প্রভুর হয়ে আইনি লড়াইতে নামতে চেয়েছিলেন বর্ষীয়ান অ্যাডভোকেট রবীন্দ্র ঘোষ। তবে তিনিও সেই শুনানিতে অংশ নিতে পারেননি নানান আইনি জটিলতার কারণে। এরই সঙ্গে তিনি হেনস্থার অভিযোগও করেছিলেন অন্যান্য আইনজীবীদের বিরুদ্ধে। সেই রবীন্দ্র ঘোষ আবার বর্তমানে লকাতার এসএসকেএমে ভর্তি অসুস্থতার কারণে। এই সবের মাঝেই আশঙ্কা, আজ ফের বিনা শুনানিতেই চিন্ময় প্রভুকে জেল হেফাজতে পাঠাতে পারে আদালত। (আরও পড়ুন: টেসলার গাড়ি করে ট্রাম্প হোটেলে নাশকতার ছক? ভেগাসে বিস্ফোরণ নিয়ে বিস্ফোরক মাস্ক!)
আরও পড়ুন: হাসিনাকে না পেলে ভারতের সাথে সম্পর্কে ছিন্ন? 'অন্য স্বার্থ' মনে পড়তেই ঢাকা বলল…
আরও পড়ুন: আত্মসমর্পণ কিষেণজির ভাতৃবধূ বিমলার, ১৮ পুলিশকে খুনের অভিযোগ মাওবাদী নেত্রীর নামে
এর আগে চট্টগ্রাম বারের ৬০ জন হিন্দু আইনজীবীর বিরুদ্ধে সাইফুল হত্যার মামলায় অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। অনেককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগও উঠেছিল। তবে এর মধ্যে অনেকেই চট্টগ্রাম আদালতে স্বাভাবিক ভাবেই প্র্যাক্টিস করছেন। এদিকে চট্টগ্রাম বার অ্যাসোসিয়েশনের তরফ থেকে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র সাইফুল হত্যা মামলায় অভিযুক্তদের হয়ে কাউকে মামলা লড়তে বারণ করা হয়েছে। চিন্ময় প্রভুর অন্য কোনও মামলায় কাউকে লড়তে বারণ করা হয়নি। এদিকে এর আগে রবীন্দ্র ঘোষকে ওকালতনামা দেবেন বলেও দেননি চট্টগ্রামের আইজীবী সুমিত আচার্য্য। তিনি বাংলাদেশি সংবাদপত্রের কাছে দাবি করেন, কেউ তাঁকে ওকালতনামা দিতে বারণ করেনি, তবে তিনি মাসিক চাপের কারণে ওকালতনামা দিতে অস্বীকার করেছিলেন পরে। এদিকে গত ২৬ নভেম্বর শুভাশিস শর্মা নামে এক আইনজীবী ওকালতনামা পেশ করেছিলেন চিন্ময় প্রভুর মামলায়। তবে তিনি আজ এই মামলার শুনানিতে উপস্থিত হবেন কি না, তা স্পষ্ট নয়। (আরও পড়ুন: এটাই কি বৈষম্য বিরোধিতার নমুনা? BCS থেকে হিন্দুদের নাম বাদে প্রশ্ন বাংলাদেশে)
আরও পড়ুন: আমেরিকায় ১৫ জনকে খুন করা 'জঙ্গি' প্রাক্তন সেনাকর্মী, তার গাড়িতে ISIS পতাকা: FBI
প্রসঙ্গত, গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে সমাবেশ করেছিল বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ। সেই সমাবেশে ভাষণ দিয়েছিলেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুও। সেই সমাবেশেই নাকি তিনি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা করেছিলেন। এই অভিযোগেই চট্টগ্রামে একটি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেন বিএনপি নেতা ফিরোজ খান। গত ৩১ অক্টোবর চিন্ময় দাস-সহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন সেই নেতা। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই গত ২৫ নভেম্বর ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুকে গ্রেফতার করে ঢাকা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা। এরপর তাঁকে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিকে ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের আদালতে বাইরে হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকে জড়ো হয়েছিলেন চিন্ময় প্রভুর গ্রেফতারির প্রতিবাদ জানাতে। সেই জনতার ওপর নির্বিচারে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে এই সংঘর্ষে এক আইনজীবী খুন হন। সেই খুনের ঘটনায় অন্তত ১০ জন হিন্দুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এদিকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের হয়ে কোনও আইনজীবী যাতে মামলা না লড়েন, তার জন্যে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করার ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত চন্দন দাসকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতের বিরুদ্ধে অভিযোগ, চন্দন দাসই নাকি কিরিচ হাতে আইনজীবীকে কুপিয়েছিলেন। সেই সময় তার পরনে ছিল কমলা রঙের গেঞ্জি আর কালো প্যান্ট। কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেল স্টেশনের কাছ থেকে চন্দনকে গ্রেফতার করা হয়। শ্বশুরবাড়িতে যাওয়ার পথে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ দাবি করে, ঘটনার দিন ধারালো অস্ত্র দিয়ে আইনজীবী সাইফুলকে কোপান ওম দাশ, চন্দন ও রবিন। বাকি আরও অনেকে সাইফুলকে মারতে থাকেন। পুলিশ দাবি করছে, তারা নাকি খুনের ভিডিয়ো হাতে পেয়েছে। সেই ভিডিয়ো ফুটেজ দেশে শনাক্ত করা হয়েছে ধৃতদের। সেই ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, প্রায় ১৫ থেকে ২০ জন সেই আইনজীবীকে মারছে। এর মধ্যে দু'জন হেলমেট পরে থাকা ব্যক্তি কুপিয়েছে সাইফুলকে।