হেলেসপন্টের এক পারে মশাল জ্বেলে দাঁড়িয়ে হিরো। সেই আলো লক্ষ্য করে রাতে সাঁতার কাটতেন লিয়েন্ডার। উত্তাল ঢেউ পেরিয়ে দেখা করতেন প্রেমিকার সঙ্গে। গ্রিক পুরাণের এক ভালোবাসার কাহিনী।
শুধু গ্রিক পুরাণই নয়। বাংলাদেশের সিনেমা 'মনপুরা'তেও এমন উদাহরণ রয়েছে। পরীর ভালবাসার টানে সাঁতরে নদী পার করতেন সোনাই।
গল্প-কাহিনীতে প্রেমিকরাই সাধারণত সাঁতরে নদী পার করেন। তবে বাস্তব কল্পনার চেয়েও বিস্ময়কর। বাস্তবে প্রেমিকাই সাঁতরে চলে এলেন প্রেমিকের কাছে। ভারতের প্রেমিকের হাত ধরলেন বাংলাদেশের কৃষ্ণা মণ্ডল। মাতলার ঢেউয়ে মুছে ফেললেন সীমানার গণ্ডি।
তবে গ্রিক হোক বা বাংলাদেশি- দুই প্রেম কাহিনীরই শুভ পরিণতি হয়নি। বাস্তবেও শেষটা মধুর হল না। বেআইনিভাবে ভারতে প্রবেশের অভিযোগে ওই তরুণীকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
জেরায় তরুণী জানান, প্রেমিকের সঙ্গে আলাপ ফেসবুকে। নরেন্দ্রপুরের রানিয়ার অভীক মণ্ডলের সঙ্গে মেসেঞ্জারেই প্রেম। ঠিক করেন তাঁকেই বিয়ে করবেন। কিন্তু মাঝে যে সীমান্তের বাধা! তাঁর যে পাসপোর্ট বা ভিসা নেই।
তারপরেই সিদ্ধান্ত নেন কৃষ্ণা। ঠিক করেন, সাঁতরেই ভারতে যাবেন। যেমন ভাবা, তেমন কাজ। প্রথমে বাংলাদেশের সুন্দরবনের জঙ্গল ঘেরা পথে আসেন। তারপর নির্দিষ্ট স্থানে নদীত নামেন। প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে মাতলার ঢেউয়ে সাঁতার কাটেন। জলে কুমির, ডাঙায় বাঘ- কোনও ভয়ই দমাতে পারেনি তাঁকে।
সাঁতরে এ রাজ্যের দক্ষিণ চব্বিশ পরগণায় ওঠেন কৃষ্ণা। সেখানেই অপেক্ষা করছিলেন প্রেমিক অভীক। তাঁকে গাড়িতে করে নিয়ে আসেন তিনি। এরপর কালীঘাটে গিয়ে বিয়ে করেন তাঁরা।
বিয়ের পর সুখের সংসারও পাততে শুরু করেন দু'জনে। এদিকে এই সাহস ও ভালোবাসার কাহিনীই কাল হল। লোকের মুখে ছড়িয়ে পড়ে তাঁর সাঁতরে নদী পার করার গল্প। খবর পৌঁছে যায় পুলিশের কানে।
সোমবার রানিয়া এলাকায় অভিযান চালায় নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ। বেআইনিভাবে ভারতে প্রবেশের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।
পুলিশ জানিয়েছে, দিন চারেক আগে ভারতে প্রবেশ করেছেন কৃষ্ণা। মঙ্গলবার তাঁকে আদালতে পেশ করা হবে।