ইন্ডিয়ান এনার্জি উইকে অংশ নিতে ভারতে এসেছেন বাংলাদেশের জ্বালানি উপদেষ্টা মহম্মদ ফৌজলুল কবির খান। আর দিল্লিতে দাঁড়িয়ে মোদী সরকারের নীতির প্রশংসা করলেন তিনি। বিগত দিনে মার্কিন চাপেও মাথা নত করেনি ভারত। রাশিয়া থেকে জ্বালানি কিনে গিয়েছে মোদী সরকার। এই ইস্যুতে এর আগে ভারতের 'মেরুদণ্ড' দেখে প্রশংসায় ভাসিয়েছিলেন ইমরান খান। প্রত্যক্ষ ভাবে সেই ইস্যুতেই ভারতের প্রশংসা করলেন মহম্মদ ফৌজলুল কবির খান। তিনি বলেন, 'জ্বালানি পোর্টফোলিওর ক্ষেত্রে ভারতের অনেক বৈচিত্র্য আছে। এমনটাই হওয়া উচিত। ভারতের জ্বালানি চাহিদা প্রচুর তাই তা পূরণ করতে তাদের বিভিন্ন উৎসের ওপর নির্ভর করতে হয়।' (আরও পড়ুন: ট্রাম্পকে হারাতে চাঁদা দেওয়া ইউনুস এখন মার্কিন সাহায্যের জন্যে হা-হুতাশ করছেন!)
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে জারি 'আওয়ামি নির্মূল অভিযান', ৪ দিনে ক'জন 'ডেভিল' ধরল ইউনুসের সরকার?
এদিকে ভারত এবং বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে মহম্মদ ফৌজলুল কবির খান বলেন, 'আমরা প্রতিবেশি। এই আবহে আমরা একে অপরের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখতে মুখিয়ে আছি। এটা একটি 'ফেজ'... এটা পাস করে যাবে। সার্বভৌম সমতার ভিত্তিতে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে স্বাভাবিক বন্ধুত্ব পুনঃস্থাপিত হবে।' (আরও পড়ুন: ‘অজুহাত…’, হাসিনা ইস্যুতে ভারতের মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন, হাল না ছাড়ার বার্তা ঢাকার)
এদিকে গত তিন মাস ধরে বাংলাদেশে আর্ধেক বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে আদানি। তবে গ্রীষ্মের আগে আদানির থেকে পুরো বিদ্যুৎ চাইল বাংলাদেশ। উল্লেখ্য, বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার জন্যে ঝাড়খণ্ডে যে বিদ্যুৎকেন্দ্র আদানি স্থাপন করেছে, তার উৎপাদন ক্ষমতা ১৬০০ মেগাওয়াট। তবে বকেয়া না মেটানোয় আপাতত আদানি ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে বাংলাদেশকে। এই আবহে ভারতে এসে বাংলাদেশের জ্বালানি উপদেষ্টার 'এই মিষ্টি কথা' বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। (আরও পড়ুন: ধানমন্ডি কাণ্ডের মাঝেই বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করবেন জয়শংকর?)
উল্লেখ্য, হাসিনা জমানার চুক্তি অনুযায়ী, ২৫ বছর ধরে আদানির থেকে বিদ্যুৎ কেনার কথা বাংলাদেশের। এই আবহে বিপিডিবির চেয়ারম্যান মহম্মদ রেজাউল করিম বলেন, 'বর্তমানে আমরা মাসে ৮ কোটি ৫০ লাখ ডলার করে দিচ্ছি। আমরা আরও বেশি অর্থ পরিশোধের চেষ্টা করছি। বকেয়ার পরিমাণ কমানোই আমাদের লক্ষ্য। এখন তাই আদানির সঙ্গে কোনও সমস্যা নেই।' এদিকে সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশের কাছ থেকে আদানির পাওনার পরিমাণ ৮৫ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার। এই আবহে বকেয়া মেটাতে বাংলাদেশকে চিঠি দিয়েছে আদানি। জানানো হয়েছে, জুনের মধ্যে এই বকেয়া বিল পরিশোধ না করলে লেট ফি বাবদ জরিমানা ধার্য করা হবে। এরই মাঝে গত ৯ জানুয়ারি আদানি ও পিডিবির প্রতিনিধিদলের মধ্যে বৈঠক হয়েছিল।
এর আগে গত ২০২৪ সালের অক্টোবরে সময়মতো বকেয়া না মেটাতে পারায় বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী একটি ইউনিট বন্ধ করে দিয়েছিল আদানি। এদিকে আদানির বকেয়া মেটানো নিয়ে টালবাহানার মাঝেই আদানির সঙ্গে চুক্তির বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে বাংলাদেশের আদালতে মামলাও হয়েছে। উল্লেখ্য, হাসিনা জমানায় দরপত্র ছাড়া বিশেষ ক্ষমতা আইনে নাকি চুক্তি করা হয়েছিল আদানির সঙ্গে। এই আবহে চুক্তি নিয়ে আছে বিতর্ক। এদিকে যে বিশেষ ক্ষমতা আইন বলে আদানির সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি হয়েছিল, সেই আইন বাতিল করেছে বর্তমানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এদিকে বাংলাদেশের অভিযোগ, আদানির সঙ্গে করা বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তিতে কিছু অনিয়ম নাকি তারা খুঁজে পেয়েছে। এই সবেরই মাঝে আদানির মিটারে বাংলাদেশের বিল বেড়েই চলেছে।