বাংলাদেশের খুলনায় হিন্দু পড়ুয়া অর্ণব সরকার খুনের ঘটনায় তাঁর বন্ধুকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতের নাম গোলাম রব্বানি। পুলিশের দাবি, এই গোলাম অর্ণবের 'ঘনিষ্ঠ বন্ধু' ছিল। পুলিশ জানাচ্ছে, গোলামই অর্ণবকে ফোন করে ঘটনাস্থলে ডেকেছিল। পরে সেখানে এসে দুষ্কৃতীরা গুলি করে খুন করে অর্ণবকে। এদিকে কী কারণে অর্ণবকে খুন করা হয়েছে, তা নিয়ে এখনও কিছু বলেনি পুলিশ। জানা গিয়েছে, খুনের রাতেই গোলাম সহ তিনজনকে পুলিশ আটক করেছিল এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে। এর মধ্যে গতকাল পুলিশ দু'জনকে ছেড়ে দেয়। তবে গোলামকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পেশ করা হয়।
উল্লেখ্য, ২৪ জানুয়ারি স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ খুলনা শহরের তেঁতুলতলা মোড় এলাকায় খুন করা হয়েছিল অর্ণবকে। অর্ণব খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএ-র ছাত্র ছিলেন। জানা গিয়েছে, ২৪ জানুয়ারি রাত সাড়ে ন'টা নাগাদ খুলনা শহরের তেঁতুলতলা মোড়ে একটি চায়ের দোকানে চা খাচ্ছিলেন অর্ণব। দোকানের সামনেই নিজের বাইকে হেলান দিয়ে ছিলেন তিনি। সেই সময় আচমকা কয়েকটি মোটোরসাইকেল সেখানে এসে পৌঁছায়। কিছু বোঝে ওঠার আগেই বাইকে থাকা দুষ্কৃতীরা মলা চালায় অর্ণবের ওপরে। অর্ণবকে লক্ষ্য করে বাইক আরোহী দুষ্কৃতীরা গুলি চালায়। সেই গুলি অর্ণবের মাথা ভেদ করে। সেখানেই লুটিয়ে পড়েন অর্ণব।
এদিকে ঘটনা ঘটিয়ে সঙ্গে সঙ্গে সেখান থেকে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। এবং বাইক আরোহীদের কাছে বন্দুক থাকায় তাদের কেউ আটকানোর সাহস করতে পারেনি। তবে দুষ্কৃতীরা পালাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। অর্ণবকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয়রা বেসরকারি সিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই চিকিৎসকরা সেই পড়ুয়াকে মৃত বলে ঘোষণা করে। ময়নাতদন্তের পরে অর্ণবের মৃতদেহ তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তাঁর গ্রামের বাড়িতে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় অর্ণবের। মৃত পড়ুয়ার ছোট ভাই অনীক মুখাগ্নি করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের প্রবেশিকা পরীক্ষা দিতে না গিয়ে দাদার শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন অনীক। এদিকে অর্ণবের মৃত্যু শোকবিহ্বল হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তাঁর মা লিপিকা রানি। অর্ণবের বাবা নীতিশ চন্দ্র সরকার খুলনার সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেখানে অজ্ঞাত পরিচয় ২৫ থেকে ৩০ জনকে অভিযুক্ত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও কারও নাম তাতে উল্লেখ করা হয়নি।