বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই সীমান্তে কাঁটাতার দেওয়া নিয়ে সংঘাত দেখা গিয়েছে বিএসএফ এবং বিজিবির মধ্যে। এই আবহে একধিক জায়গায় ভারতীয় ভূখণ্ডের কাঁটাতার দিতে গিয়ে বাধার মুখে পড়ছে বিএসএফ। এর জেরে সীমান্তের বহু জায়গায় ছড়িয়েছে উত্তেজনা। এই ইস্যুতে বাংলাদেশের দাবি, ১৯৭৫ সালে যে আন্তর্জাতিক সীমান্ত চুকি দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল, তা অনুযায়ী, সীমান্তের জিরো পয়েন্ট থেকে ১৫০ গজ ভিতরে 'প্রতিরক্ষা কাঠামো' তৈরি করা যাবে। এদিকে ২০১০ সালে অবশ্য বাংলাদেশ ভারতকে লিখিত আকারে অনুমতি দিয়েছিল যে সীমান্তে ১৫০ গজের ভিতরেও প্রয়োজনে কাঁটাতারের বেড়া দিতে পারবে ভারত। এই কথা নিজে স্বীকার করেছেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। (আরও পড়ুন: বিকট আওয়াজে ঢুবতে শুরু করে বাংলাদেশি জাহাজ, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল এপার বাংলা)
আরও পড়ুন: 'সীমান্তে একটি বাংলাদেশি লাশ পড়লে ভারতে ফেলা হবে দু'টি', হুঁশিয়ারি এল ওপার থেকে
গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই কাঁটাতার বিতর্ক প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সরকারি ভাবে দাবি করে এসেছে, ভারত নাকি নানান স্থানে চুক্তি ভঙ্গ করে বেড়া দিচ্ছে। তবে বাংলাদেশের সংবাদপত্রের রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গির আলম চৌধুরী গত ১২ জানুয়ারিই মেনে নেন, ২০১০ সালে ভারতকে লিখিত আকারে অনুমতি দিয়ে বাংলাদেশি সরকার বলেছিল জিরো লাইনের ১৫০ গজের ভেতরেও কাঁটাতারের বেড়া বসাতে পারবে ভারত। সেই সময় শেখ হাসিনা সরকার ছিল সেখানে। একবছর আগেই তিনি সেই দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। তবে সেই কারণে বর্তমান সরকার ভারতকে দেওয়া সেই লিখিত অনুমতি প্রত্যাখ্যান করতে পারে না। তার জন্যে ফের আলোচনায় বসতে হবে বাংলাদেশ সরকারকে। (আরও পড়ুন: 'দিল্লির বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন', গলাবাজি বাংলাদেশে, গভীর রাতে যা হল...)
আরও পড়ুন: গাজায় ফিরেও ফিরছে না শান্তি? যুদ্ধবিরতি কার্যকরের আগেই নয়া হুমকি ইজরায়েলের
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের মার্চে দিল্লিতে বিএসএফ ও বিজিবি মহাপরিচালকদের মধ্যে বৈঠক হয়েছিল। সেই সময় তৎকালীন বিএসএফ ডিজি রামন শ্রীবাস্তব জানিয়েছিলেন, স্বরাষ্ট্রসচিবদের বৈঠকে বাংলাদেশ ভারতকে অনুমতি দিয়েছে যাতে সীমান্তের দেড়শো গজের মধ্যেও ভারত কাঁটাতারের বেড়া বসাতে পারবে ভারত। সেই যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর তৎকালীন প্রধান মইনুল ইসলামও। বিএসএফ প্রধানের কথায় তিনি সায় দিয়েছিলেন। এদিকে ভারত আসলে কাঁটাতারকে প্রতিরক্ষা কাঠামো হিসেবে দেখে না। শুধুমাত্র আন্তঃসীমানা অপরাধ ঠেকানোর উপায় হিসেবে কাঁটাতারকে দেখে ভারত। তাতে উভয় দিকেই লাভ মিলবে। তবে বিগত দিনে গরু পাচারকারীদের হয়েও গলা ফাটাতে শোনা গিয়েছে বিজিবিকে। সীমান্ত পার রু পাচার করতে গিয়ে বাংলাদেশি দুষ্কৃতী বিএসএফের গুলি খাওয়ায় প্রতিবাদ জানিয়েছিল বিজিবি। অনুপ্রবেশকারীদের ওপর বিএসএফের গুলি চালানোর প্রতিবাদেও সরব বাংলাদেশ। তারা যেন কার্যত অনুপ্রবেশের পক্ষেই গলা চড়াচ্ছে। এরই মাঝে ২০১০ সালের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত চুক্তি প্রসঙ্গে মুখ খুলে কার্যত নিজেদের 'ভুল' মেনে নিলেন জাহাঙ্গির।