ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কয়েকটি এলাকায় বিএসএফের বেড়া নির্মাণের চেষ্টায় আপত্তি তুলেছিল বিজিবি। এদিকে সীমান্তে একাধিক জায়গায় অনুপ্রবেশকারীদের আটকাতে গিয়ে আবার বাংলাদেশিদের ওপর গুলি চালাতে হয়েছে। এই সব নিয়ে বাংলাদেশে একটি বিএসএফ বিরোধী মনোভাব তৈরি করার চেষ্টা চলছে বিগত বেশ কয়েক মাস ধরেই। হাসিনার বিদায়ের পর থেকেই নয়া অন্তর্বর্তী সরকারের সদস্য থেকে শুরু করে হাসিনা বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীরা উস্কানিমূলক মন্তব্য করে যাচ্ছেন। সেই তালিকাতেই এবার নবতম সংযোজন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। ১৮ জানুয়ারি দুপুরে রংপুরের গংগাচড়া উপজেলায় একটি অনুষ্ঠানে এসে তিনি মন্তব্য করেন, 'সীমান্তে বাংলাদেশের একটি লাশ পড়লে ভারতের দুটি পড়বে।' এদিকে তাঁর আরও অভিযোগ, কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ভূমি দখলে নেয়ার পাঁয়তারা করছে ভারত। (আরও পড়ুন: 'দিল্লির বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন', গলাবাজি বাংলাদেশে, গভীর রাতে যা হল...)
আরও পড়ুন: আরজি কর কাণ্ডে 'সুপ্রিম নির্দেশিকা' অমান্য করছে CBI? বিস্ফোরক নির্যাতিতার মা
নুরের অভিযোগ, এর আগে নাকি শেখ হাসিনা সরকার বিএসএফকে অনেক 'সুযোগ' দিয়েছিল। এই আবহে ইউনুস সরকারের কাছে তাঁর আবেদন, বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মানুষদের যাতে সামরিক ট্রেনিং দেওয়া হয়। তিনি বলেন, 'আমাদের স্পষ্ট বার্তা, আমরা বেঁচে থাকতে, এই দেশের ১৮ কোটি মানুষ এই দেশের ১ ইঞ্চি জমিও ভারতকে দখল করতে দেবে না। ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে বলে দিতে চাই আপনারা শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর যে অশুভ খেলা শুরু করেছেন, সেটা বন্ধ করুন। অন্যথায় আপনাদের জন্য সেটা ভালো হবে না।' (আরও পড়ুন: গাজায় ফিরেও ফিরছে না শান্তি? যুদ্ধবিরতি কার্যকরের আগেই নয়া হুমকি ইজরায়েলের)
আরও পড়ুন: ফের পডকাস্টে মোদী, মুখোমুখি হবেন লেক্স ফ্রিডম্যানের, কে এই মার্কিনি?
এরই মাঝে ১৮ জানুয়ারি মালদায় ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তে বাংলাদেশি এবং ভারতীয় কৃষকদের সংঘর্ষ হয়। সেখানে গিয়ে বিএসএফ পরে বাংলাদেশিদের তাড়িয়ে দেয়। উল্লেখ্য, মালদার শুকদেবপুর সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দিতে বিএসএফকে লাগাতার বাধা দিয়ে আসছে বিজিবি। এই নিয়ে ডিসেম্বর মাসে দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে সীমান্তে। দিন কয়েক পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক থাকার পর অবশ্য ১৮ জানুয়ারি সকাল থেকে নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায় সেখানে। লাঠি, হাঁসুয়াসহ বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে কাঁটাতারহীন এলাকা দিয়ে ভারত ভূখণ্ডে হামলা চালানোর চেষ্টা করে বাংলাদেশিরা। অভিযোগ, স্থানীয়দের ক্ষেতের ফসল লুঠপাট করে তারা। পালটা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন ভারতীয় গ্রামবাসীরাও। খবর পেয়ে এলাকায় পৌঁছয় প্রচুর বিএসএফ জওয়ান। দুপক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ বেঁধে যায়। ভারতীয়দের লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছোড়ে বাংলাদেশিরা। তাদের ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ। তবে তাতেও পিছু হঠেননি গ্রামবাসীরা। অবশেষে বাংলাদেশি দস্যুদের পিছু হঠাতে কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায় বিএসএফ।
পরে ঘটনা প্রসঙ্গে বিএসএফ একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলে, 'ভারতীয় কৃষকদের পুরোপুরি পিছু হটানো হয়েছে, তবে বিকেল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সীমান্তের ৫০-৭৫ মিটারের মধ্যে কিছু বাংলাদেশি নাগরিকের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছিল। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে এ অঞ্চলের বিএসএফ ও বিজিবি ইউনিটের কমান্ড্যান্টরা সমন্বয় জোরদারে কাজ করছেন। সীমান্তের পরিস্থিতি এখন সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ও নিয়ন্ত্রণে।'