আবারও গ্রেফতার করা হল এক বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে। ধৃতের কাছ থেকে উদ্ধার করা হল আগ্নেয়াস্ত্র, কার্তুজ এবং টাকা। টাকা বলতে, এখানে ভারতীয় মুদ্রা এবং বাংলাদেশি মুদ্রা - দুই ধরনের টাকার কথাই বলা হচ্ছে। ঘটনাটি ঘটেছে ত্রিপুরার আগরতলায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আগরতলার মিলনচক্র এলাকা থেকে মঙ্গলবার রাতে তাঁকে পাকড়াও করা হয়।
এখনও পর্যন্ত যে তথ্যাবলী সামনে এসেছে, সেই অনুসারে - ধৃত ওই বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীর নাম - সমাজপ্রিয় চাকমা। তিনি বাংলাদেশের খাগরাচরী জেলার বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে।
ধৃত ব্যক্তিকে তল্লাশি করে তাঁর হেফাজত থেকে পুলিশ একটি নাইন এমএম পিস্তাল উদ্ধার করে। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, সেটি কারখানায় তৈরি করা আগ্নেয়াস্ত্র। সেইসঙ্গে, ধৃত সমাজপ্রিয় চাকমার কাছ থেকে তিন রাউন্ড অব্যবহৃত গুলি বা কার্তুজও বাজেয়াপ্ত করা হয়।
এছাড়াও ধৃত ব্যক্তির কাছ থেকে দু'টি অ্যানড্রয়েড স্মার্ট ফোন এবং প্রচুর পরিমাণে নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়েছে। যার মধ্য়ে ভারতীয় মুদ্রায় ছিল ২ লক্ষ ২১ হাজার টাকা এবং বাংলাদেশি মুদ্রায় ছিল ২৫ হাজার টাকা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তাদের কাছে গোপন খবর এসেছিল সমাজপ্রিয় চাকমা সম্পর্কে। পুলিশ জানতে পেরেছিল, কোনও এক বাংলাদেশি নাগরিক বেআইনিভাবে ভারতে ঢুকে সংশ্লিষ্ট এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন।
এই তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার ওই এলাকায় অভিযান চালায় ত্রিপুরা পুলিশ। নীলকান্ত দেব নামে স্থানীয় এক বাসিন্দার বাড়িতে তল্লাশি চালায় তারা। সেখান থেকেই সমাজপ্রিয় চাকমাকে গ্রেফতার করা হয়। যেখানে ওই বাংলাদেশি নাগরিক গা-ঢাকা দিয়ে ছিলেন।
এই ঘটনা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে সদরের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক (এসডিপিও) দেবপ্রসাদ রায় সাংবাদিকদের জানান, 'আমরা ধৃত ব্যক্তির কোনও সহযোগীর সন্ধান পাইনি। এমনকী, তাঁর কোনও পাসপোর্টও পাওয়া যায়নি। আমরা ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছি।'
তথ্য বলছে, ত্রিপুরা দিয়ে বাংলাদেশিদের অনুপ্রবেশ নতুন কিছু নয়। এমন বহু বাংলাদেশিকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। ২০২২ থেকে গত বছরের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত এই সংখ্য়াটা হল - ২,৮১৫।
এই সময়ের মধ্যে এই এলাকায় মোট যত জন বাংলাদেশিকে অনুপ্রবেশের দায়ে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত ১,৭৪৬ জনকে ইতিমধ্য়েই বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
বাদবাকি ১,০৬৯ জন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী হয় ভারতের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন, অথবা তাঁদের কোনও না কোনও শেল্টার হোমে রাখা হয়েছে। কেউ কেউ রয়েছেন অস্থায়ী ডিটেনশন সেন্টারে। আর, কিছু ব্যক্তি জামিনে মুক্ত হয়ে গিয়েছেন।