রাতের অন্ধকারে, মুখে রুমাল বেঁধে মন্দিরে ঢুকে প্রতিমা ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠেছিল বছর পঁচিশের এক যুবকের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশের লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার সেই ঘটনায় অভিযুক্ত ছেলেকে পাকড়াও করে পুলিশের হাতে তুলে দিলেন তাঁরই বাবা। যদিও তাঁর দাবি, তাঁর ছেলে 'মানসিক ভারসাম্যহীন'!
বাংলাদেশি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, ধৃত ওই যুবকের নাম জাকির হোসেন। তিনি রায়পুর উপজেলার চরমোহনা ইউনিয়নের বাসিন্দা মনির আহমেদের ছেলে।
ঘটনা প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ, ২০২৫) রাত ৯টা নাগাদ রায়পুর পৌর শহরের শ্রীশ্রী মহামায়া মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনাটি ঘটে। সিসিটিভি ক্যামেরায় বন্দি হয়ে যায় হামলার সেই ঘটনা। তাতে মুখে রুমাল বাঁধা অবস্থায় এক যুবককে বিগ্রহের কাছে যেতে এবং সেটিকে ভাঙচুর করতে দেখা যায়। কিন্তু, মুখে রুমাল বাঁধা থাকলেও ওই যুবককে চিনতে কোনও সমস্যা হয়নি বলে দাবি সূত্রের।
তদন্তে উঠে আসে, যিনি ভাঙচুর করেছেন তিনি এলাকারই বাসিন্দা জাকির হোসেন। এরপর এই ঘটনায় জাকিরের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেন ওই মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ সাহা। অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরই জাকিরের বাড়িতে পৌঁছে যায় পুলিশ। তাঁর বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় এবং তাঁকে ছেলের কীর্তির কথা সবিস্তারে জানানো হয়।
সূত্রের দাবি, জাকিকের বাবাকে বোঝানো হয়, তিনি যেন অবিলম্বে তাঁর ছেলেকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। পুলিশের নির্দেশ মতো, ঘটনার প্রায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই - শুক্রবার (১৪ মার্চ, ২০২৫) রাতে জাকিরকে পাকড়াও করে পুলিশের হাতে তুলে দেন মনির আহমেদ। পুলিশ অভিযুক্তকে এরপর গ্রেফতার করে। শনিবার (১৫ মার্চ, ২০২৫) ধৃতকে স্থানীয় আদালত পেশ করা হয় এবং বিচারক ধৃতকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
জাকিরের বাবা পুলিশ ও সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ওই ভাঙচুরের ঘটনার পর তাঁর ছেলে নাকি বাড়ির পাশেই একটি সুপুরি বাগানে লুকিয়ে ছিলেন। সেখান থেকে তাঁকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
একইসঙ্গে, ছেলের রক্ষণে এক আজব সাফাই দিয়েছেন মনির আহমেদ। তাঁর দাবি, তাঁর ছেলে নাকি মানসিক ভারসাম্যহীন। মাঝেমধ্যেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। গত ৮-১০ বছর ধরে নাকি এমনটা চলছে। কিন্তু, প্রশ্ন হল - একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি ভাঙচুর করতেই পারেন। কিন্তু, রাতের অন্ধকারে মুখে রুমাল বেঁধে ভাঙচুর যিনি করেন, তিনি কি সত্যিই মানসিক ভারসাম্যহীন হতে পারেন? পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে বলে জানা গিয়েছে।