গতকালই পদত্যাগ করে বাংলাদেশ ছেড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই আবহে দেশটি আপাতত কোনও শাসকবিহীন অবস্থায় আছে। বর্তমানে সেখানে সব ক্ষমতা সেনার হাতে। এমনকী সেনা প্রধানই গতকাল হাসিনার পদত্যাগের কথা ঘোষণা করেন এবং অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের কথা জানান। বিএনপি, জামাত সহ আওয়ামি লিগ বিরোধী সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই 'সুন্দর আলোচনা'র কথাও জানান সেনা প্রধান। পরে রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেয়, সেনা সমর্থিত কোনও সরকার তারা মানবে না। এমনকী রাষ্ট্রপতি শাসনও তারা মানবে না। তাহলে তারা কি চায়? সোমবার রাতে তারা জানিয়েছিল, পরবর্তী সরকারের রূপরেখা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রকাশ করা হবে। এই আবহে মঙ্গলবার ভোর হতে না হতেই নিজেদের দাবির কথা জানালেন আন্দোলনকারীরা। জানানো হল, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে নোবেলজয়ী ডঃ মহম্মদ ইউনুসকে চায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। (আরও পড়ুন: হাসিনার দেশ ত্যাগের দিনেও বাংলাদেশে মৃত ১০৯, নৃশংস তাণ্ডব বিক্ষোভকারীদের)
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে রামকৃষ্ণ মিশন, ইসকন সহ ৯ মন্দিরে হামলা, ২৯ জেলায় আক্রান্ত সংখ্যালঘুরা
আরও পড়ুন: মাশরাফির বাড়ি দেখিয়ে দাবি, 'পুড়ছে লিটনের বাড়ি', ভুয়ো খবর নিয়ে সতর্ক WB পুলিশ
ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম মুখ তথা অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম আজ ভোরে জানান, ইউনুসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পক্ষে তারা। ইউনুসের সঙ্গে নাকি এই নিয়ে কথা হয়েছে আন্দোলনকারী ছাত্রদের। ডঃ ইউনুস নাকি তাঁদের দাবিতে সায় দিয়েছেন। শেখ হাসিনা ইস্তফা দেওয়ার পর বাংলাদেশ মুক্ত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন নোবেলজয়ী ইউনুস। হাসিনাকে 'স্বৈরশাসক' আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, 'আজ বাংলাদেশের সব মানুষ নিজেদের স্বাধীন মনে করছে।' এরপর তিনি বলেন, 'আমরা এখন নতুন করে শুরু করতে চাই এবং আমাদের জন্য একটি সুন্দর দেশ গড়ে তুলতে চাই।' এদিকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অবশ্য ডঃ ইউনুস দাবি করেছিলেন, তিনি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হতে চান না।
আরও পড়ুন: হাসিনার বিদায়ে 'খুশি' USA, নীরব সোমের অরাজকতা নিয়ে, UN তদন্তের দাবি ব্রিটেনের
এদিকে জানা গিয়েছে, গতকালও হিংসা জারি থাকায়, ২১ জুলাই থেকে বাংলাদেশে মোট মৃতের সংখ্যা ৪৪০-এর গণ্ডি ছাড়িয়েছে। বাংলাদেশের সংবাদপত্র প্রথম আলোর রিপোর্ট অনুযায়ী, সোমবারের সংঘর্ষে বাংলাদেশে মৃত্যু হয়েছে ১০৯ জনের। রাজধানী ঢাকাতে অন্তত ১৩টি পুলিশ স্টেশনে হামলা হয়েছে গতকাল। বাংলাদেশের দু'টি কারাগারে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এদিকে এই অশান্ত পরিবেশের ফাঁকে বাংলাদেশে বিভিন্ন সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় হামলার অভিযোগ ওঠে। এই আবহে বাংলাদেশের বিভিন্ন মন্দিরের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নেয় আন্দোলকারী পড়ুয়াদের একাংশ।