ত্রিপুরার উদয়পুর রেলস্টেশনের জিআরপি-র ইনসপেক্টর ইন চার্জ গৌতম দেববর্মা বলছেন,'যদি ওঁরা আমায় আধার কার্ড দেখিয়েছিলেন, তবে আমার সন্দেহ হওয়ায় জেরা করি। তারা স্বীকার করে নেন যে তাঁরা বাংলাদেশ থেকে এখানে এসেছেন দালালের সাহায্যে।' সোমবার সকাল ৭ টা নাগাদ ত্রিপুরার উদয়পুর স্টেশনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন লিপি আখতার ও তাঁর পরিবার। লক্ষ্য ছিল সেখান থেকে ট্রেন ধরে শিয়ালদা। তারপর শিয়ালদা থেকে আমেদাবাদ যাবেন। আমেদাবাদে কাজের খোঁজ করতে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল লিপি আখতারদের।
ত্রিপুরার উদয়পুর রেল স্টেশন থেকে বাংলাদেশের লিপি আখতার সহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে জিআরপি। পুলিশের কাছে জেরায় লিপি জানিয়েছেন, মাথা পিছু ১৫ হাজার টাকা তারা দালালকে দিয়ে ভারতে এসেছেন বাংলাদেশ থেকে। তাঁদের একটি করে ভুয়ো আধার কার্ডও করে দেয় ওই দালাল। সেখানে পশ্চিমবঙ্গের বহরমপুরের ঠিকানা ছিল। জিআরপির জেরায় জানা গিয়েছে, দালালকে হাতিয়ার করে বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরায় ঢুকে সেখান থেকে পশ্চিমবঙ্গ হয়ে গুজরাটের আমেদাবাদে যাওয়ার প্ল্যান ছিল ৫ বাংলাদেশির। তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে প্রবল জিনিসের দাম। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তাঁরা পেটের দায়ে ভারতে এসেছেন। তাঁরা বলছেন,' আমরা ভারতে এসেছে পেটের দায়ে। যাতে পেটে খাবার জোটে, একটা ভালো জীবন পাওয়া যায়। বাংলাদেশে মুদ্রাস্ফীতি খুব বেশি। সেখানে চালের দাম ১০০ টাকা কেজি, কিম্বা তারও বেশি। দেশ আর আগের মতো নেই।'
কীভাবে বাংলাদেশ থেকে ময়মনসিংহের এই ৫ বাসিন্দা ভারতে এলেন? ধৃতরা জানিয়েছেন, তাঁরা আন্তর্জাতিক সীমান্ত পার করে এক রাত দালালের বাড়িতে ছিলেন। তারপর উদয়পুর স্টেশনে পৌঁছন যাতে ট্রেন ধরতে পারেন। কীভাবে দালালের সন্ধান পেলেন? প্রশ্নের উত্তরে ধৃতরা বলছেন,'এক ভাইয়ের কাছ থেকে এঁর নম্বর পাই।' এরপর কী তাঁরা ফের বাংলাদেশ ফিরতে চান? ধৃতরা বলছেন, পরিস্থিতি আগের মতো হলে, তাঁরা বাংলাদেশে ফিরতে চান। উল্লেখ্য, গত ৫ অগস্ট বাংলাদেশে ছাত্র গণ অভ্যুত্থানে মসনদ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই ঘটনাকে ঘিরে বাংলাদেশে তোলপাড় হয় রাজনীতি। এরপরও অশান্তির নানান খবর আসতে থাকে ওপার বাংলা থেকে। তারই মাঝে ভারতে বহু অবৈধ বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীর গ্রেফতারির খবর উঠে আসছে।