সরকারের দুর্নীতি ফাঁস করতে গিয়ে গ্রেফতার হলেন বাংলাদেশের মহিলা সাংবাদিক। ঘটনা ঘিরে উত্তাল হয়ে উঠল ঢাকা। সোমবার রাতে ১৯২৩ সালের সরকারি গোপনীয়তা রক্ষা আইনে গ্রেফতার করা হয়েছে ‘প্রথম আলো’র বরিষ্ঠ মহিলা সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে। মহিলা সাংবাদিকের গ্রেফতারির প্রতিবাদে সরব হয়েছেন সতীর্থরা।
তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিনা অনুমতিতে তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নথি মোবাইলে ছবি তুলে তা প্রকাশ্যে আনার চেষ্টা করছিলেন। এবিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের দাবি, করোনার টিকা নিয়ে রাশিয়া ও চিনের সঙ্গে সম্প্রতি স্বাক্ষর করা চুক্তির নথি নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন রোজিনা। সেই সময় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব ও এক পুলিশ কর্মীর হাতে ধরা পড়ে যান তিনি।
অভিযোগ উঠেছে, গ্রেফতার করার আগে তাঁকে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সচিবালয়ে আটকে রাখা হয়। সোমবার সারারাত তিনি পুলিশি হেফাজতে ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। মঙ্গলবার ৫ দিনের পুলিশি হেফাজত চেয়ে রোজিনাকে আদালতে পেশ করে শাহবাগ থানা। তবে সেই আবেদন খারিজ করে তাঁকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে ঢাকার সিএমএম আদালত। বৃহস্পতিবার মামলার পরবর্তী শুনানি ধার্য করেছে আদালত।
জানা গিয়েছে, সোমবার বেলা সাড়ে তিনটে নাগাদ সচিবালয়ের স্বাস্থ্য মন্ত্রকে যান রোজিনা । তাঁকে সেখানে একটি ঘরে আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। তাঁর মোবাইলও কেড়ে নেওয়া হয়। এই ঘটনার পর সেখানেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। ঘটনায় গোটা রাত শাহবাগ থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান সাংবাদিকরা।
বাংলাদেশের জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘রোজিনা তদন্তমূলক সাংবাদিকতায় অনন্য। আন্তর্জাতিক স্তরে তাঁর স্বীকৃতি আছে। কী কারণে তাঁকে আটকে রাখা হল, তাছাড়া অসুস্থ হওয়ার পরও কেন তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হল না, তার তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।’
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘বৃহস্পতিবার জামিন শুনানি আছে। আশা করি রোজিনা ইসলাম ন্যায় বিচার পাবেন।’
উল্লেখ্য, বরাবরই বিভিন্ন সরকারি মন্ত্রকের অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে লেখালেখি করেন রোজিনা। অভিযোগ, সেই রাগ থেকেই অনৈতিক ভাবে রোজিনাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।