পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টে বদলি হওয়া বিচারপতি এস মূরলীধরকে অসামান্য বিদায় সংবর্ধনা দিল দিল্লি হাইকোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশন।
বৃহস্পতিবার দিল্লি হাইকোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত বিদায় সংবর্ধনায় তাঁকে ‘দিল্লি হাইকোর্টের কোহিনুর’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি এন প্যাটেত সংবর্ধনায় বলেন, ‘আজ আমরা একজন প্রখ্যাত বিচারপতিকে হারাতে চলেছি, যিনি আইনের যে কোনও প্রসঙ্গে আলোচনা করতে দক্ষ এবং যে কোনও বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম।’

দিল্লি হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অভিজাত বিচারপতি মূরলীধরকে ‘দিল্লি হাইকোর্টের কো্হিনুর’ বলে সম্বোধন করেন। পরে বদলি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের ছেড়ে মাত্র কয়েকশো মাইল দূরে যাচ্ছেন বিচারপতি মূরলীধর।’
গত ১২ ফেব্রুয়ারি আচমকা বিচারপতি মূরলীধরের বদলির প্রস্তাব দেয় সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম। ২৩ ফেব্রুয়ারি দিল্লি দাঙ্গা সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে সরকারি আইনজীবীর আবেদন নাকচ করে দিল্লি পুলিশকে দাঙ্গায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতে কড়া নির্দেশ দেয় বিচারপতি মূরলীধর ও বিচারপতি তলওয়ান্ত সিংয়ের হাইকোর্ট বেঞ্চ। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে রাতেই বিচারপতির বদলি কার্যকর করার নির্দেশ দেয় প্রশাসন। এই নিয়ে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়।

সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট করা একাধিক ফোটোতে বিদায়ী বিচারপতির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বহু আইনজীবীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। বিদায়ী ভাষণে বিচারপতি মূরলীধর বলেন, দিল্লি হাইকোর্টের সঙ্গে যুক্ত হওয়া তাঁর কাছে ছিল ‘এক অবিশ্বাস্য পরিহাস’, কারণ কোনও দিন আইনজীবী হতে তিনি চাননি।

বিচারপতি মূরলীধর বলেন, ‘আইনকে পেশা হিসেবে নেওয়ার ইচ্ছে ছিল না আমার। আমি এক আইনজীবীর ছেলের সঙ্গে ক্রিকেট খেলতাম এবং তাঁর চেম্বারেই নিজের ক্রিকেট ব্যাগটি রাখতাম। ততদিনে আমি এমএসসি-তে সই করে ফেলেছি।’
প্রসঙ্গান্তরে তিনি ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনা সংক্রান্ত মামলার স্মৃতিচারণ করেন। তিনি বলেন, ‘যখন সুবিচারের জয়োল্লাসের সময় আসে, তখন তা না হয়ে যায় না। সর্বদা সত্যের জয় হয়, সুবিচারের জয় অনিবার্য।’