'কোল্ডরিফ' কাশির সিরাপ পান করে ২২ শিশুর মৃত্যু পরে দেশজুড়ে ড্রাগ পরীক্ষা জোরদার করা হয়েছে। এই আবহে গুজরাটেও দুটি সংস্থার কাশি সিরাপে অনুমোদিত সীমার চেয়ে বেশি ডাইথিলিন গ্লাইকোল (ডিজি) পাওয়া গিয়েছে। এরপরই তাৎক্ষণিকভাবে সেই দুই কোম্পানির একটি ব্যাচকে নিষিদ্ধ করে দিয়েছে সরকার। কোল্ডরিফ কাশির সিরাপ কিডনি নষ্ট করে দিয়ে শিশুদের মৃত্যুর জন্য দায়ী বলে প্রমাণিত হয়েছে ইতিমধ্যেই।
এই আবহে গত ৭ অক্টোবর গুজরাটের খাদ্য ও ওষুধ নিয়ন্ত্রণ বিভাগ দ্বারা প্রকাশিত তথ্যে বলা হয়েছে যে রেসপিফ্রেশ টিআর এবং রিলাইফ কাশি সিরাপের প্রতিটি ব্যাচে ডাইথিলিন গ্লাইকোল নামক একটি রাসায়নিক নির্ধারিত সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে। রেসপিফ্রেশ টিআর আহমেদাবাদ জেলায় অবস্থিত রেডনেক্স ফার্মাসিউটিক্যালস দ্বারা উত্পাদিত এবং রিলাইফ শেখপুরের শেপ ফার্মা দ্বারা উত্পাদিত হয়। এই অতিরিক্ত পরিমাণে ডাইথিলিন গ্লাইকোল পাওয়া গিয়েছে রেসপিফ্রেশ টিআর-এর ব্যাচ নম্বর R01GL2523, এই ওষুধের মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ- ১২/২০২৬ এবং রেডনেক্স ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যাচ নম্বর LSL25160, মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ ১২/২০২৬। এই আবহে খুচরো বিক্রেতা, পাইকারি বিক্রেতা এবং ডিস্ট্রিবিউটর, হাসপাতাল ইত্যাদিকে এই ব্যাচগুলি বন্ধ করতে বলা হয়েছে।
এদিকে এই ভেজাল কোল্ডরিফ কাশির সিরাপ তৈরি করা সংস্থার মালিক রঙ্গনাথনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই কোম্পানির নাম শ্রীসান ফার্মা। পুলিশ জানিয়েছে, ওষুধ কোম্পানির মালিককে গতকাল রাতে চেন্নাই থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং ট্রানজিট রিমান্ডে নেওয়ার পরে তাকে মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়ারা জেলায় নিয়ে যাওয়া হবে। সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, মধ্যপ্রদেশ পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে আটক করার পরপরই এই গ্রেফতার করা হয়। ইতোমধ্যে কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মধ্যপ্রদেশ পুলিশ রাজ্যে বিষাক্ত সিরাপ খাওয়ার পরে কমপক্ষে ২২ শিশুর মৃত্যুর খবর জানা গিয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে প্রবীণ সোনি নামের এক চিকিৎসককেও গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি বেশিরভাগ শিশুকে এই সিরাপ খাওয়ার জন্য প্রেস্ক্রিপশনে লিখেছিলেন। এদিকে কেন্দ্রীয় সরকার আরও দুটি ব্র্যান্ড - রিলিফ (শেপ ফার্মা) এবং রেসপিফ্রেশ (রেডনেক্স ফার্মাসিউটিক্যালস) নিষিদ্ধ করেছে।
মধ্যপ্রদেশ ছাড়াও রাজস্থানেও এই সিরাপে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের বেশিরভাগই পাঁচ বছরের কম বয়সি। মৃত শিশুরা ছিন্দওয়াড়া, পান্ধুরনা ও বেতুল জেলার বাসিন্দা। মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, পুদুচেরি ও ওড়িশায় এই সিরাপ সরবরাহ করত সংস্থাটি। তামিলনাড়ু সরকার এই রাজ্যগুলিকে সিরাপ বিক্রি বন্ধ করার জন্য একটি পরামর্শ জারি করেছে। কোল্ডরিফ সিরাপ পান করার পর শিশুদের কিডনিতে সংক্রমণ হয়। এর আগে চলতি মাসের শুরুতে তামিলনাড়ু কর্তৃপক্ষ এই কোল্ডরিফ সিরাপের নমুনায় বিষাক্ত ও ক্ষতিকারক পদার্থ ডাইথিলিন গ্লাইকোল পায়। এরপরই সিরাপটিকে ভেজাল বলে ঘোষণা করেছিল।