বাদুড় থেকে মানুষের দেহে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঘটে না। জনস্বার্থে এই বিবৃতি প্রচার করলেন ৬৪ জন প্রাণীবিজ্ঞানী।
দেশজুড়ে করোনা সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় জীবাণু বহনকারী প্রাণী হিসেবে বাদুড়কে নিশানা করেছেন অনেকে। এর জেরে লোকালয়ের আশপাশে বাদুড়ের আশ্রয় ভাঙা থেকে শুরু করে নিশাচর প্রাণীটিকে নির্বংশ করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন একদল। তাঁদের যুক্তি, বাদুড়ই বহন করে এনেছে Covid-19 রোগের জীবাণু।
অতএব পটকা ফাটিয়ে, গাছের নীচে ধোঁয়া দিয়ে আর গাছের ডাল থেকে খসে মাটিতে পড়ামাত্র নিরীহ প্রাণীগুলিকে পিটিয়ে মেরে ফেলার মতো নৃশংস কাজে মেতেছেন অনেকে।
প্রাণীবিজ্ঞানীরা কিন্তু বলছেন, করোনা সংক্রমণের পিছনে বাদুড়ের কোনও ভূমিকা নেই। শুক্রবার এক বিবৃতি প্রকাশ করে ৬৪ জন বিজ্ঞানী জানিয়েছেন, প্রায় ৪০ থেকে ৭০ বছর আগে হয়তো এক প্রজাতির বাদুড়ের শরীরে থাকা RaTG13 ভাইরাস বিবর্তনের মাধ্যমে Sars-Cov-2 বা নোভেল করোনাভাইরাস সৃষ্টি করেছিল। তাই বলে, বাদুড় থেকে সরাসরি মানুষের দেহে ওই ভাইরাস সংক্রমণ সম্ভব নয়।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘গবেষণায় দেখা গিয়েছে, করোনা আক্রান্ত মানুষের ফুসফুসে পাওয়া জীবাণুর সঙ্গে কিছুটা সাদৃশ্য রয়েছে এক প্রজাতির বাদুড়ের দেহে থাকা ভাইরাসের। কিন্তু বাদুড় থেকে তা সরাসরি মানবদেহে সংক্রামিত হতে পারে না। এর জন্য দরকার কোনও নমধ্যস্থতাকারী প্রাণীর। এই মুহূর্তে বেশ কিছু প্রমাণ মিলেছে যার জেরে সন্দেহের আঙুল উঠছে প্যাঙ্গোলিনের দিকে। তবে এখনও পর্যন্ত তার জন্য মজবুত বিজ্ঞানভিত্তিক প্রমাণ মেলেনি।’
সম্প্রতি ICMR-এর পরীক্ষায় জানা গিয়েছে, ভারতে দুই প্রজাতির বাদুড়ের দেহে এক ধরনের করোনাভাইরাসের উপস্থিতি রয়েছে। কিন্তু তার সঙ্গে Covid-19 রোগের জীবাণুর মিল নেই।
বিজ্ঞানীদের মতে, পশুর দেহ থেকে মানুষের দেহে জীবাণু সংক্রমণ ঘটতে পারে বন্যপ্রাণীদের বিচরণক্ষেত্র ধ্বংসের ফলে। এই কারণে, নতুন জীবাণু সংক্রমণ ঠেকাতে হলে প্রাকৃত্কি পরিবেশ সংরক্ষণ জরুরি বলে জানিয়েছেন প্রাণীবিজ্ঞানীরা।