গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিবিসি ইন্ডিয়ার দফতরে গিয়ে 'সমীক্ষা' চালিয়েছিল আয়কর দফতর। পরে বিদেশ থেকে অর্থপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগে বিবিসি ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল ইডি। ‘ফরেন এক্সচেঞ্জ ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট’-এর অধীনে মামলা রুজু করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট। এই আবহে বিবিসিকে ফাঁকি দেওয়া কর দিতে হবে বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিবিডিটি কর্তারা। জানা গিয়েছে, আয়কর দফতর যে তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে বিবিসির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছিল, তা কার্যত মেনে নেয় বিবিসি। জানা গিয়েছে, ৪০ কোটি টাকার আয় লুকিয়েছে বিবিসি। যা কার্যত কর ফাঁকির সমান। এই আবহে সিবিডিটি জানিয়েছে, নতুন করে আয়কর রিটার্ন ফাইল করতে হবে সংস্থাকে।
জানা গিয়েছে, আয়কর দফতরকে সম্প্রতি বিবিসি একটি ইমেল করে। তাতে তারা মেনে নেয় যে ৪০ কোটি টাকার আয় তাদের আয়কর রিটার্নের সময় দেখানো হয়নি। এই আবহে এই আয়ের ওপর যে কর ফাঁকি দেওয়া হয়েছে, তা পেনাল্টি সমেত দিতে হতে পারে বিবিসিকে। এই আবহে বিবিসিকে নতুন করে আয়কর রিটার্ন ফাইল করতে হবে। সেই ক্ষেত্রে ফাঁকি দেওয়া করের ওপর পেনাল্টি এবং ইন্টারেস্ট দিতে হতে পারে তাদের। যদিও বিবিসির এই ইমেলের আইনি বৈধতা নেই। বিবিসিকে আইনি পথে হাঁটতে গেলে নতুন করে আয়কর রিটার্ন ফাইল করতে হবে। এদিকে সিবিডিটির এক কর্তা হিন্দুস্তান টাইমসকে জানিয়েছেন, যতক্ষণ না বিবিসি সঠিক পদক্ষেপ করছে, ততক্ষণ আমরা তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে থাকব।
উল্লেখ্য, ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গায় নরেন্দ্র মোদীর ভূমিকা নিয়ে বিবিসির তথ্যচিত্র প্রকাশের পরই আয়কর দফতরের অভিযান হয়েছিল। এই আবহে ব্রিটিশ সংস্থার তরফে দাবি করা হচ্ছিল, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্যই এই অভিযান চালানো হচ্ছে। তবে এখন তারা 'অনানুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের ভুল স্বীকার করছে'। এর আগে অবশ্য বিবিসি দাবি করেছিল, দিল্লি এবং মুম্বইতে তাদের দফতরে আয়কর অভিযানের সময় আধিকারিকদের পুরোপুরি সাহায্য করছে তারা।
গত ফেব্রুয়ারিতে বিবিসির নয়াদিল্লি এবং মুম্বইয়ের কার্যালয়ে প্রায় ৬০ ঘণ্টা ‘সমীক্ষা’ চালিয়েছিল ভারত আয়কর দফতর। যে ঘটনা নিয়ে সেইসময় তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। বিশেষত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে বিবিসির একটি বিতর্কিত তথ্যচিত্রের (যে তথ্যচিত্রের লিঙ্ক টুইটার, ইউটিউবকে মুছে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্র) পর সেই ‘সমীক্ষা’-র কারণে ভারত সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার অভিযোগ তোলা হয়েছিল। তবে সেই সময়ও সরকার জানিয়েছিল, কোনওরম প্রতিহিংসামূলক পদক্ষেপ করা হয়নি।